পা-ছড়িয়ে বসে আছি বালুচরে
একা
চর জুড়ে মানুষ আর মানুষ
শিশুদের ছোটাছুটি হুটোপুটি খেলা
খেলা চলছে চরাচর জুড়ে
খেলা চলছে দৃশ্য-অদৃধ্য পটে
দিকচক্রবালে
আড়ালে-আবডালে
এ-খেলায় নেই জয়-পরাজয়
খেলা চলছে বিশ্ব-খেলাঘরে।


ঘোর বর্ষা, তবু
মুগ্ধ ম্পনোহরা ওই পশ্চিম আকাশ
রক্তিম
কিছু মেঘ আজও বয়ে চলেছে
যক্ষের চুম্বন-আঁকা প্রেমলিপি
প্রিয়ার ঠিকানায়
সূর্যালোকপথে
বয়ে নিয়ে সাগরের রেণু।


কলকাতার রাস্তায় এখইন জল জমেছে
জল জমেছে মনের সরণীতে
মেঘ জমেছে   ভারাক্রান্ত   সজল
এখন সন্ধ্যার দীপমালা জ্বলছে নিভছে
জল ভেঙে আলোক-বর্ষাস্নাত পাখিরাও
ঘরে ফিরছে
কর্মক্লান্ত দিন অবসানে
প্রেয়সীর বাহুবন্ধনে।


আর, আরব সাগরের তীরে
অস্তগামী দিবাকর আপন হাসির
বে-নি-আ-স-হ-ক-লায়
রাঙিয়েছে আদিগন্ত আকাশ
বাশি-বেহালার করুণ সম্ভাষণে
একটু পরেই
চোখের পলক পরার ফাঁকে
তিনি দেবেন ডুব রাঙিয়ে সাগর
তোমার লজ্জারুণ গালের মত…
রঙিন আকাশে লেগে থাকবে তার রেশ


তারপরেই
বিদায়ব্যথা হরণ করে আবির্ভূতা হবেন
সন্ধ্যাদেবী
পশ্চিম আকাশে জ্বল জ্বল করবে সাঁঝ তারা
তোমার ভ্রুসঙ্গমের নক্ষত্র হয়ে।
পৃথিবী ফের মেতে উঠবে সৃষ্টির
লুকোচুরি খেলায়
মননে মননে
দানে-দহনে-গ্রহণে-আঘ্রাণে
আদি অনন্ত কালজয়ী এ-খেলা
সমুদ্র-পাহাড়-জঙ্গল-সমতলে
জয়-পরাজয় গর্ব-গ্লানির হিসাবহারা মধুরবিলাসে


বর্ষণস্নাত এ-সন্ধ্যা
বঙ্গোপসাগর থেকে চাতক প্রতীক্ষা নিয়ে
বেলাভূমে পা ছড়িয়ে
দু-হাত বাড়াই পশ্চিমের বালুতটে…


ও গো আরব সাগরের মেয়ে!