উনি বললেন, তোমাদের কোনও কবি কখনও আমাজন দেখেছেন? বাঙালি ভিতুর ডিম, গহণ অরণ্যে যাবে? সে কাহিল ভুতের ভয়ে।
বললাম৷ অমরেন্দ্র বাবু তো কি লিখেছেন 'আমাজনের জঙ্গলে'। নাই বা গেলেন। আমাজন যে বিশ্বের বৃহত্তম বন, সে তো জানাই। অক্সিজেন দেয়...
তিনি বিরাট মানুষ, পকেটভরা টাকায় বিশ্ব সফরের পারমিট, দু ডজন কোম্পানির মালিকানার অংশপত্র, ঘরে সেলারে বিদেশি পানীয়।
তার 'কিস্যু জান না' শুনে বললাম, - জানেন, ওখানে রেডউড পাওয়া যায়৷ শুধু পাখির খাওয়া বীজে চারা জন্মায়। গাছ না থাকলে পাখি নেই, মানে...
বললেন, থাক! তোমায় রেড উডের একটা পাখি দেব, ঘর সাজাবে। শজারুর মাংস খাবে? দামী মদের সাথে?
আঁতকে বললাম, নাঃ! আমাজনে আদিবাসীরা প্রাণিদের ভালবাসে। ওদের লোভ নেই৷ কোনও অভিযোগ নেই।
আর, অনুভবই তো আসল। কিলিমাঞ্জারো না গিয়ে লেখা বিভূতিভূষণের 'চাঁদের পাহাড়' কি সত্য নয়?
তিনি বললেন, সবজান্তা বাবু, আমাজনের নিচে ঐশ্বর্য আছে, তেল আছে, খনিজ সম্পদ আছে। আরও কত কি। কাঠ না হলেও চলে। তেল ছাড়া সব অচল!
আমার প্রায়-বধির কানে  রবীন্দ্রনাথের উচ্চারণ, সভ্যের বর্বর লোভ নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা...
তিনি বললেন, তেল খনিজে সভ্যতা এগোয়।
বললাম, মানুষ কাঁদছে! প্রাণিরা সব পুড়ে যাচ্ছে!
বললেন, এভাবেই পুড়িয়ে রোস্ট হয়, কাঁদো তখন?
আমার মগজে খরগোশ, তিতিরের কান্না; চিলের আর্তনাদ; ভয়ার্ত শ্বাপদের শেষ আর্তি। অসহায়ের মত শেষবার বললাম, "রেড উড, আহা! আর কোথাও নেই রেড উড! উফফ...
তিনি বললেন- রেড উড পুড়লে চন্দন মতো সুগন্ধ ছড়ায়, জানো?
আমি খাণ্ডবদাহনের দিনে ময়দানবকে স্বচক্ষে দেখলাম।