আঁকা বৃত্তের দ্রোহ


সাদা কাগজ
পতিত টেবিলে পাতা
পেন্সিলের কার্বন মুখো ছোঁয়া; ত্রিবেদি আঙ্গুলে
ধরে বিন্দুর সমীপে টান টান সমারহ
যেন গোলক প্রতিবিম্ব ডিম্বাকৃত
এক মহাযোঞ্গ্য!


খলবলিয়ে জেগে উঠে প্রামাণ্য আকার
সাদা বর্ণহিন শরীরে
একটি বৃত্ত।
====


ফসিলে প্রাপ্ত চিহ্ন


ফসিলে প্রাপ্ত চিহ্ন। মাথার করোটির ডান পাশের অংশের। মৃত্তিকা শরীরে গলেছে শরীর। ধীরে ধীরে থিতে থিতে। নিঙড়ে নিঙড়ে। কালে কালের ধ্বংসলীলায়, সরে গেছে মেরুদন্ড।


অন‌্য কোন স্তুপে, স্বমূলে নিঃশেষিত। সেখানেই চিহ্ন ছিল, বৃত্তে নাতি দীর্ঘ খর্ব রেখার টান। এলো মেলো কৌনিক বৃত্তের ক্ষদ্রাংশ।
====


শুদ্ধ স্নানে প্রলয় মঙ্গল


গোলক পাড়ে বাস
কোটি কোটি কাল ধরে, কোটি কোটি জীব জড়
স্বাধীন বিবর্তণের ফল, রাশি রাশি জলরাশির
শুদ্ধ স্নানে প্রলয় মঙ্গল।


প্রলয়ে মৃত্যু,
ক্ষুধার দহনে দ্রোহ, স্বপ্ন ডানার সুনীল আকাশ
উচ্ছ্বল জলরাশির উজল বুক, পাহার চূড়ায় ঐ চন্দ্র হাসে
দিক বিজয়ের স্বপ্ন ধরা জীবন বাঁচে।
====


সময় বৃত্তে ক্ষূরধার প্রত্যয়


সময় বৃত্তে ক্ষূরধার প্রত্যয়
কারো কথা শোনা বাড়ন?
স্রোতের তোরে যায়রে ভেসে
নাহি রুখে সে না না বাঁধে!
হাওয়ার মতো যায়রে সেও বইয়ে
নন্দন রুপকথার জীবন থাকে পরে।


পরে থাকে,
কত স্বপ্ন আঁকা প্রত্যয়?
না মিটিতে হৃদয় সখ কত?
ক্ষয়ে যায়,
সময় ক্ষেপ বৃত্তের শরীর ধরে!
====


একই বৃত্তে যৌবন


এক বৃত্তে জন্ম, শিশু, কৌশর; একই বৃত্তে যৌবন
বৃত্তেই যখন বিদ্রোহ কোলাহল; বৃত্তেই ক্ষুধা আহার প্রণয়
বৃত্তেই জেগে উঠে দিন সম্ভার; বৃত্তেই আঁধার রাতের স্নান


বৃত্তেই মেঘ ঘনালেই বৃষ্টি; আকাশ ছাপিয়ে দিগন্তে জলছবি
বৃত্তেই মেঘের জলে রংধুনু হাসে; পূর্ণ চাঁদের জোছনায় মাখামাখি
বৃত্তেই যখন থই থই বর্ষা; ঝড় ঝঙ্জায় এলো মেলো লোকালয়
===


এই বৃত্ত গায়ে জড়িয়ে পথের তিলত্বমা


বৃত্তে, সরল পথও বক্র পথ বনে যায়। গোলক পরিধির, রং লাগে রং মুছে যায়। পাশ কেটে যায়। বর্ধিত ধুঁয়াসা কাল। এই বৃত্ত গায়ে জড়িয়ে পথের তিলত্বমা। অসীম সীমানা।


ভেঙেছে জুড়েছে। উপর নিচু সমতল খর্বকার। বিল ঝিল নদী নালা সাগরে দিশেহারা। কোথাও কেউ নেই। কূল কিনারা। চোখের সিমানায়  যতটুকু। তার পর নেই সাধ্য কারো।
=====


শঙ্খচিলের ধ্রুবদি সুখতারা


বৃত্তের শরীরে এক তর্জনির দাগ,
গোলক ধাঁধায় ধাঁধিয়ে যায়, অনন্ন্য কালের পরম্পরায়
ইতিহাস হয়ে উঠে প্রত্যয় মিথস্ক্রিয়া।


বজ্রমুষ্টি হাতের উল্কির বান,
দ্রােহ বিদ্রোহ কালে কালে সঙহার, ক্ষুধার খরায় পোড়া
বার বার অধিকার লুন্ঠিত হয়।


বার বার তর্জনির ছোঁয়ায়,
জেগেছে বৃত্তের বন্ধ্যা জড়া, আগল খোলা আকাশে ঐ উড়ে
শঙ্খচিলের ধ্রুবদি সুখতারা।
====


এমনি করেই কেটে যায় কালের খড়িমাটি


বৃত্ত বলয়,
গড়িয়ে গড়িয়ে ক্লান্ত বেসুমার।
কখন যেন,
ভেঙে পরে কর্দয অবহেলায়?
কু'মার্য্য সু'মার্য্য,
না না সন্তাপে পরিপাটি।


তবু কেন যে?
এমনি করেই কেটে যায় কালের খড়িমাটি।
ধুরতে গেলে বুঝতে গেলে,
বিভ্রুম লাগে সরাসরি।
===


গোলক ধাঁধায় গোলক পৃষ্ঠে


বাঁকা চাঁদের ভূবনমোহিনী হাসি;
বসে কাঁদে পোড়া রাত।


কথার বৃত্তে কথা যায় ভেসে;
এপাড়া ওপাড়া।


থই থই জলে গাঙ ভেসে যায়;
সব দিকে কেঁদে ফিরে।


পথের বাঁকে পথভোলা পথিক;
পথের তালাশে দিশাহারা।


চলিতে চলিতে সাঁঝ ঘনাল;
গোলক ধাঁধায় গোলক পৃষ্ঠে।
====


জীবন মৃত্যু চলাচলে অনির্বাণ মশাল


প্রথম বোলে,
যে বুঁদ বুঁদ উড়েছিল বাতাসে ভেসে; খোলা ঐ নীলকাশে
সে দিনই এঁটে ছিল বৃত্তের আগল।


অধুনা বন্দনা,
কালে কালে মুক্তির দ্রোহ সোপান; বার বার হারিয়েছে
মরিচিকায় বিবর্ণ মিছিলে।


এ আগল,
জীবন মৃত্যু চলাচলে অনির্বাণ মশাল; ঘুরে ফিরে
একই আলোয় পরম্পরায় মিলায়।


১৪২৩/১৮, মাঘ/শীতকাল।