জলের ফোটায় এ কোন বৃত্ত?


জলের ফোটায়
এ কোন বৃত্ত?
ঝর ঝর ঝরনার
অহমিকা আঁকে; বৃত্তের
প্রপাতে মরমী শরীর যেন
আত্মজা আবিষ্ট,
গুঞ্জন মাখে।
সুদূর পরাহত যাতনা যত
কালের অঙ্গে অঙ্গে
জল সিঞ্চনের মতো
নপুর ঝঙ্কার বুনে।


ভুলে থাকা রমনীয় মার্ধুয্য
বসন্ত ঢেলেছে তারই গায়ে
যত পার কবিতা বিলাও
পাপ পণ্যের জনম
খুঁড়ে খুঁড়ে।
========


শৈশব কৈশরে


শৈশব কৈশরে খুলেছিল যতটুকু,
নিয়ম ভাঙ্গার বয়ান।
যৌবনে তা বাঁধান হারা প্রপাত,
ছন্নছাড়া বিলাপ।
আগল খোলা আকাশ লুকিয়ে গেল,
দিগন্ত পাড়ে।
যৌবন হারা প্রলয় কূল হার প্লাবন,
ভাসিয়ে দিশে হারা।


বাঁধান হারা বসন্তে উদ্ভাসিত যৌবন,
গায় স্বপ্ন যুগোল প্রণয়।
আঁকিতে তারে পাথরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে,
চাহিতে চাহিতে বেলা গেল ঢলে।
=====


বেঁচে বর্তে থাকাটাই বৃত্তজুড়ে


দিন তো থাকে,
দিনের সীমায়; রাতও  তাই
চাপাচাপি করে,
এদিক ওদিক বা বাড়ানো কমানো
নিয়ম ভাঙার
অধিকার রাখে না তো কেউ।


এমনি বৃত্ত!
সদা চরা চরে নিত্য গেঁথে রাখে
উত্তীর্ণ কাল,
শুধু সেই দেখভাল করে।


বেঁচে বর্তে থাকাটাই বৃত্তজুড়ে
অবগাহন; মৃত্যু পুরান
সে তো ভেঙ্গেছে বৃত্ত, পরিধির দোলাচল
ছিঁড়েছে একলোহমায়
পার্থিব্য দায় কি মুছে গেছে সব?
======


পাদুকা তলে


পাদুকা তলে,
এ কোন পদচিহ্ন আঁকা বৃত্ত সমারহ?
হাঁটি হাঁটি পায়ের প্রদাহ জুড়ে
না পারার কান্না লুকিয়ে থাকে।


এক'কদম দু'কদম
চলতে পথে, ধাপে ধাপে
পথ ফুরায় নিয়ত সীমানায়
থেমে যায় পাদুকার দঙ্গল।


খোলা আকাশে
নীল ষ্পর্শে হাওয়া, দিন ঘনায়ে
রাত্রি নেমে আসে যথা তথা
কালের বিবর্ণ ছবি ধরবে বলে।
=====


নিত্য গহন জুড়ে


খাঁচার দুয়ার খুলে
উড়ে গেল পাখি।


গোলকাকৃতির খাঁচা ছিল
লোহার তারে; বেষ্টুনি তার!
খাঁজ কাটা দেয়ালে
আটোসাঁটো করে
ঝালাই লাগানো।


বন্দিশালা যেন
ইচ্ছা করলেই বেড়োনো যায় না;
অথচ দেখো এমনি গহনকাল!
না চাইলে, বেরুতে না পারা
আবার না চাইতেই
বেড় করে দেয় সহজেই।


এ যে বক্র রেখায় বসবাস
নিত্য গহন জুড়ে।
===
হাওয়ার অবগাহন


নিত্য বসবাস চর্তুভুজ গৃহে
চতুোষকোণ; দরজা জানলা ঘেরা
আত্মস্থ হাওয়া যায় খেলে
কোন সে আকার ধরে?


টেনে নেই নিঃশ্বাস
বেড়িয়ে আসে বায়ু!
কোন সে রুপে পড়ে নিলাম্বরী?
গাছের পাতায় পত পত ধ্বনী
কোন সে বায়ু যায়?
মেঘ ভাসিয়ে ঘুরে বেড়ায়
কেমন সে বায়ুর গায়?


উজান বায়ু; ভাটির বায়ু
উর্দ্ধমুখী হাওয়া
নিম্নমুখী বাতাস বলে কথা।
কোন সে বাতাস কোন সে রুপে?
নিত্য করে চলাচল।
====


আঁকা ছক


শর্ত সেতো
ধাতব বেড়ার মতোই
অথবা বাঁশের বেড়া; আঁকা ছকে
এখানে জীবন ভর প্রাণী জড়র বসবাস।
হাওয়া ছুঁয়ে,
ঢেউয়ের আন্দোলন সেই একই!
ছকের আদলে বাঁধা; ছড়ানো
ছিটানো নক্ষত্র পুঞ্জ বিচিত্র বৈভবে।


পথের ছকে,
পথের নিশানা!
শৈশব কৈশর কথা বলে; বেদৌরা যৌবন
প্রেম বিলিকাটে সিঁথানে।
আঁচল পাতে,
আকাশ নীলাম্বরী; দিগন্ত ছকে বাঁধা
সারি বেঁধে পাখি উড়ে যায়
নীলে আঁকা ছকে।
====


ক্ষদ্র পরিসরে


ক্ষদ্র পরিসরে যাপিত জীবন। সময় নামের বৃত্তে সাঁটা। কদর্য্য কোলাহলে, সময় যায়রে বয়ে। কথা ছিল, বৃষ্টি নামবে। জল বায়ু মেঘের পরম্বপরা। সে তো নিয়তি বলে! অপেক্ষার বৃত্তে ঘুড়ে। চাই তে চাই তে চাতক নির্বোধ, মরিচিকায় প্রহর ভাসায়। যেতে হবে পথে, দিতে হবে পারি, তবেই না সুবর্ণ বাড়ি। খাঁজে খাঁজে পায়ের ধাপের মতো পেরিয়ে গেছে, বক্র সরল কত কত পথ?


পরিধি ব্যাপি নিক্তির ব্যাসে যাপিত জীবনের ছক আঁকা।
=====


গীত কথনে মুখে মুখে


প্রেম মৌনতা, কোন ছকে বাঁধা?
কোন ব্যপতিতে প্রেম দিশাহারা?
বুঝা, না বুঝা কোন গোলকে ঘুড়ে?
গুন্ডি কি পেরিয়েছে কখনো নিকোষ স্তবতা?


ভালোবাসা সে তো স্বপ্নসম্ভার;
কোন মাপনে তার ধরন গণিতে আঁকা যায়?


প্রেম সিমানা মানে না!
জানে সইতে দুর্ন্তপনা, বিদ্রোহ, বেসুমার বাসনা,
তবুও পরিধি ছাপিয়ে যাবার ক্ষমতা কি রাখে?
রাখে কি অভিমানের অন্তর্জালে?
না কি বিরহ কষ্টের ইতিকথা গীত কথনে মুখে মুখে?
=====


প্রকৃতি বীণায় ধ্রুবতি বাজে


ছকে বেঁধেছে ঝরনার জল
পাথরে পরে খায় আছাড়,
ক্ষত বিক্ষত ছিন্নভিন্ন
তাই তো পাথরে ক্ষয়েছে গা।


এমনি স্পর্শে গাণ্ধারা বাঁচে
তাইতো জলের মুর্চ্ছণা সুরে,
দিক বিদেকে হাওয়া সঙ্গি বুনে
প্রকৃতি বীণায় ধ্রুবতি বাজে।


অঞ্চল আধিক্য সে তো
চঞ্চল নটরাজ বেদৌরা বসন্ত,
আগন জ্বলা রং লাগা পলাশ বনে
ঝরা পাঁপড়ির বিবর্ণ বিরহ।
=====


০৭, ফাল্গুন/১৪২৩/বসন্তকাল।