সপ্তক-০২


বড়ই মায়া


তুমি কি ছিলে আমারই সাথে,
প্রপিতামহের গোত্রের সেই গুহাবাসে?
সেখানে শুধু,
আকাশ নামের নীল ছাদ ছিল।
অনেক বড় বড় প্রস্থের দিগন্ত
যায় না ছোঁয়া; সবুজ গালিচা শেষে
উঁচু উঁচু পাহার পর্বত,
আর ছিল গুহার ধার ঘিঁসে বিশাল জলরাশির সমুদ্র।


খাবার তালাশে,
খুঁজে খুঁজে এই সমুদ্র চেনা, সৈকতকে জানা
জোয়ার-ভাটা ঝড়-তুফান; জলচ্ছ্বাস
ঝড়ের তান্ডব;
সুনামিতে গোত্রের সব গুহা ডুবে গেল।
ভাসতে ভাসতে পাহাড় চুড়ায় আশ্রয়
পাহারের ধারে যত সামান্য সমতলে
পাথর দেয়ালে ঘর বাঁধা শেখা।
তোমাকে টানে, বড়ই মায়া।
====


মায়া জড়াল প্রাণে


সমুদ্র জলে সেই কৈশরের স্নান,
তুমি আমি বালুকা বেলায
শৈশব কেটে গেল
কাদা জলে নেঙটি পড়ে; কত যে স্বাধীনতা!
খেলা ধুলায় নিয়ম-কাননের নাই  বালাই।


যে যেমন পারছে খেলছে,
মনে আছে তোমার
সেই বার সৈকতে মারপিট লড়ায়ে
আমার হাত গেল ভেঙে।
পিতামহের সে কি দুর্বিসহ ছুটাছুটি,
ঘাস চিবিয়ে বাঁশের চেলায় হাত বাঁধা হল;
সে কি কান্না তোমার?
আমার ব্যথায় তুমি যেন হৃদয় ভেঙে ফেলেছিলে!
বোধ হয় সেই থেকে;
মায়া জড়াল প্রাণে।
====


দিনের আলো


দিনের আলো পেয়ে
বেশ ছুটাছুটি;
নেই কোন বাড়ন যেখানে পার যাও
শুধু শাপ বিচ্ছু বাঘ সিংহ
ভল্লুক থেকে রক্ষা পাওয়ার
কৌশল পিতামহ শিখিয়ে ছিল!
তাই রপ্ত হয়েছে সেই ছোট বেলা হতেই।


পাহারের ঢালে সূর্য নেমে এলে
আলো স্থিতি হয়!
লামিমার সেই আলো ছায়া পাহারের খাঁজে খাঁজে
রং এর বিচ্ছ্বূরণ যেন
সবার মনে সৌর্ন্দয্য লীলায় রং ছুঁয়ে যায়
সবার মনে মায়া, প্রেম কড়া নারে।
=====


বায়ুর বিবর্তনের অনুকথা


বাতাসের গায়ে,
কখনো কি বিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছিল?
বা লেগেছ এখন!
কালে কালে কত কত বিবর্তন?
কিন্তু হাওয়া সে তো একই
বয়ে চলে, অনুভবে, মেঘ উড়ায়।


কখনো ঝড়ে,
কখনো আবার মৃদুমন্দ
ছন্দ দোলায় দুলে বায়ুর অবগাহন
তাই লক্ষ করেছে কি কেউ?
কোন ছকে যে আকাঁ যায়?
বায়ুর বিবর্তনের অনুকথা।
======


মানব দেশ


মনে আছে তোমার,
শৈশবের মায়ার টান ছেড়ে চলে গেলে
অন্য গোত্রের সদস্য বুনে;
গিয়েছিলে হয়তো আফ্রিকার কোন দেশে!
তখন তো কোন দেশের চিত্র ছিল না আঁকা
পুড়ো পৃথিবী জুড়েই মানব দেশ।


সেই মানব দেশেই
হারিয়ে গেলে কালের বিবর্তনের মতো
আর খুঁজে পাওয়া হল আর
তয় মনের জলে আছো এখনো ভেসে
জলে ভাসা পদ্মের মতো!
=====


আলো আঁধার পৃথিবীতে মিলে


সেই বার খেলছিলাম মোরা
যুগের প্রথম প্রান্তে,
কোজাগরী চাঁদ ছিল
খুব বিস্ময় কর!
ভয় পেতে খুব;
সাঁঝের পরে রাত নামলেই
আঁধারে চুপসে থাকত
রাতে সবে চাঁদ উঠেছে,
গাছের পাতা ফাঁকে ছায়ার লুকোচুরি;
ভুত ভেবে চোখ খুলতে না
আবছা আঁধার রাতে।
রাত গভিরে যখন চাঁদের
বিভাস ছড়িয়ে গেল
সারা পৃথিবী ময়; তখন তোমার ভ্রম
ভাঙ্গল যবে,
আলো আঁধার পৃথিবীতে মিলে।
====


জলের নাম


জলের প্রথম নাম কি ছিল?
দেখতেই বা ছিল কেমন?
এখন যেমন তরল সাদা, যুগের আঁধারে
সেই কি একই রকম ছিল?


প্র-পিতা মহরা কি নামেই বা
ডাক তো তারে?
শেখার জন্য সেই সেই কত কত কাল?
ভাটিতে যে গিয়েছে তলে।


অঙ্গার শুধু গায়ে মাখবার
ভেদ খুঁজতে নিদ্রা হারা হয় চোখ
জল, পানি কি তবে?
বিবর্তনেই নাম টি পাওয়া।


আজ ২ চৈত্র ১৪২৩