সপ্তক-০৩


বসন্ত হাওয়া


আজ সকালে প্রবল বাতাস। তেমন কোন মেঘ ছিল না আকাশে। দূরে অনেক দুরে সাদা সাদা মেঘের পিন্ড ভাসছিল যেন। অথচ ধেয়ে আসছে বায়ু। দক্ষিণা জানলায় পর্দা বেশ বিদ্রুপ অনুভব করে। পর্দা উড়িয়ে হু হু করে ঢুকে পরে, শরীর জুড়ানো হাওয়া। কেতা দুরস্ত শরীর জুড়ে শিহরন খেলে যায়।


এমন মোয়ালেম হাওয়ায়, ঘূর্নিয়মান পাখার বাতাসে বেশ লাজুক লড়াই যেন ঘরময় খেলা করে। যেন বসন্ত বিলাপ, রিনিঝিনি বনে গাইছে গান, বসন্ত এসেছে।
====


অমোঘ মগ্নতায়


রাগে অনুরাগে দিন ঠিকই বয়ে যায়। ভাসিয়ে দিয়ে যায়, সারা দিন মান, কত কত খেলার ছলে কাজ কর্মে? সাধের জীবন ব্যপিয়ায়, আহার ঘুমে যায় যায় করে রাতের পর দিন আসে। এমনি যুগে যুগে, কালে কালে অতিক্রান্ত সময় বিহব্বহল। বিবর্তনে একটু হলেও কি ক্ষয়েছে? ক্ষসে পরা তারার মতো।


খসে পরা শঙ্খচিলের পালক যুগোল, ভুতলে নিরবিচ্ছন্ন ছন্দ আঁকে। হারিয়ে যাওয়ার অমোঘ মগ্নতায়।
=====


নন্দন পথ


যদি আস'তো পথ ভুলে, মারিয়ে যেও আমার নন্দন পথের দুর্বাঘাস। যে ঘাসে সবে যৌবন ফিরেছে। লকে লকে সবুজ ডগা। ঘাসফুলে প্রজাপতি দুলে। আগাছার কি নির্মল রুপ যেন সবুজ চাঁদোয়া খেলা করে যায়! পথের পাশে ডোবা জলে টুইটুম্বর। হাসের ছানারা গা ডুবিয়ে ডুবিয়ে করে খেলা।


লাউ মাচায় সাদা ফুলে ভ্রমর গুন গুন গান গায়। মাচার কঞ্চিতে বসে আছে, লাল ঠোঁট ওলা সবুজ গায়ের মাছরাঙা। এ যে আমার সন্ধ্যাবতী গাঁয়ের মেঠো পথ।
====


বসন্ত সাঁঝ


বসন্ত হাওয়া বইছে সাঁঝে। দুপুরের রৌদ্র পোড়া যাতনা বিকেল বেলায় ঢলে পরে; সাঁঝ লালীমায়। আমলকি বনে, ঝরে পরা খলসে ইশৎ হলুদভা পাতায়, সবুজের রং লেগেছে। গাছের গিঁটে গিঁটে নতুন পাতার সুনির্মল কুশি! বন জুড়ে যেন সাঁঝের নৈঃসর্গিক
আলো আঁধার ছায়ায় সন্ধ্যা নামে।


বসন্ত সাঁঝ। চারিদিক ফুলের সুবাস ছাড়ায়, যেন সাঁঝ আবির মাখা মৌনতায় ঢেকছে, ধীর লয়ে বাজে বিমূর্ত রিনি ঝিনি ঝংকার।
=====


সন্ধ্যাবতীর খালে


নির্জিব থমকে থাকা খাল, শীতের গহন লাগা স্থীর লয়ে কুল কুল করে বয়ে চলা, সন্ধ্যাবতী গাঁয়ের ধার ঘিঁসে। এখন বেশ উনমুখ যেন একটু উতল, জলে ঢেউ এ দক্ষিণা হাওয়া বিলি কেটে যায়। হাসের ছানার দল সেই ঢেউয়ে মৃদু দোল খায়। যেন পানসি নাও হালকা হাওয়ার দোল খেয়ে খেয়ে সামনে চলে।


খেয়া ঘাটে মাঝি। তার ছোট্ট নাও। এপাড় ওপাড় করে। দিনভর। খালের ওপাড়ের ধার ঘিঁসে জেলে পাড়া। ঘাটের পাশেই খোরা জাল  পেতেছে।
======


হাওয়া বদল


কয়েক দিন আগেও, উত্তরের ক্ষেপ। শীত হাওয়া বইল। চারিদিক নির্জিব, যেন সব কিছু স্থিতু হয়ে গেল। ঠোঁটে কোণে ফাঁটল। গাছের পাতা ঝরা দিন। নাঙা সজনে গাছ। উদল আকাশ যেন, সুর্যকে ঢেকে রাখে ইশারায়। ফনিমনশার গায়ে কাঁটা শিশিরে ধুয়ে যায়। আর কনকনে বাতাসের নির্মহ যাতনা।


আস্তে আস্তে ক্ষয়ে যায় বাতাস বিহব্বল। বদল হয় শুরু। নাাঙা গাছ পাতায় ভরে। যেন ফুলের মরশুম। বসন্তে হাওয়া বদল।
======


তোমার বলয়ে


জেনে রাখ! আমি ফিরব একদিন তোমার বলয়ে। পৃথিবীর জটিল, বিপনন বৃত্তের অচেনা পথ ধরে ঠিক একদিন তোমার পথের ঠিকানা খুঁজে পাব। যেমন শঙ্খচিল, উড়ে চলে তার মৌনমগ্নতা ভেঙ্গে। ঠিক পৌছে যায় আগল আঁটা দেরাজ সমুখে।


তেমনি একদিন কড়া নেড়ে যানান দেই ফিরেছি আমি! তেমার নন্দন পুরে। দেখ প্রেম জাগ্রত আজও তোমার ম্রিয়মানে।
=====


আজ ৪ চৈত্র ১৪২৩