সপ্তক-০৭


টিকটিকি আগন্তক!


ঠিক ঠিক শব্দে ডেকে উঠে
টিকটিকি আগন্তক!
আমাদের সহবাসে ওদের বাস
খুব চেনা আমাদের সবারই
কোন কথার প্রেক্ষিতে; তো হল সারা
এই তো শুভ ঈঙ্গিত!
এটা বোধ হয় খুব পুরনো একটা সংস্কার।


টিকটিকিটা ঐ ঘরের দেয়ালে
বেশ সাচ্ছন্দে; হেঁটে যায়
দেয়ালের শরীর বেয়ে।
অবাক হতেই হয়!
মাথার উপর ঘরের ছাদ টায়
পা' উপর দিকে রেখে হেঁটে যায় নির্বিঘ্নে।
ধসর গায়ে স্বচ্ছ শরীরে মা টিকটিকির
পেটে ডিম দেখা যায়।


কারন অকারনে হটাৎ ডেকে উঠে
ঠিক ঠিক আওয়াজে!
====


কথার ছক


কিছু কিছু জায়গায়
কথার লাগাম টানা হয়,
মিটিং মিছিলে!
মূলত সাজানো কথার ফুলঝুড়ি।
পত্র, পত্রিকায়,
ঠিক নিদিষ্ট কথা;
বলেই চিঠির ইতি টানা হয়;
পত্রিকাতেও তাই!
সম্পাদকের সম্পাদনায় সমাপ্য।


তেমনি সেল ফোনে,
সেকেন্ড,মিনিট মিনিটের ছকে বাঁধা
কথার হুল্লোর! ফুলোরি
প্রেমিক প্রেমিকার আসন পাতবার
নেই প্রয়োজন; কথার ছক
টেনে টেনে বিস্তর কথার বাঁক
পেরুলেই কথায় স্বস্থি।
=====


খাপছারা


ঐ তো সেদিন ছিল, বেশ অন্যরকম। অবান্তর। এখন মনে হলে হাসি পায়। আবার কোন কোন সময় মনে মনে হাসতেও হয়। ঐ কাজ গুলো ছিল খুবই হালকা। মাত্রা বা মূল্য তো তেমন খুঁজে পাওয়া যাবে না হয় তো। খুব খুব সাধারন বিষয় ছিল বটে, কিন্ত তখন বেশ জটিলই ছিল।


এমনটা হয় কৈশর আর যৌবনের প্রারাম্ভে! বোধের ঘাটতি না কি ঐ বয়সে এমনটাই হয়; যা খুব, খুব বেমানান, খাপছারা।
=====


আঁকিয়ে


পেন্সিল স্কেস। সাদা কাগজে ধূসর রং। সেথায় আঁকিয়ে রং এর ছপ ছপ রংতুলির আঁচড়। রং এর পর রং। পরতে পরতে রং লীলায়, শরীরি অবয়ব ফুটে। আঁকিয়ে ঐ অবয়ব এ রং এর মাধুর্য্য ঢেলে খেয়ালি আত্মজনা বুনে।


রং এর বুনুনে স্বপ্নঘোর আশ্রয় চেয়েছে সেই কবে? খুঁজে খুঁজে রং এর আঁচড়ে বেঁচে থাকে আঁকিয়ের রং চেনার খেলা।
====


অচেনা


তুমি নাকি যুগ যুগ ধরে চেনা আমার! যেন তেল রং এ পটে বাঁধা বসে আছ ঠাঁয়। অথচ দেখো, কোন দিন সমুখে আস নাই কোন কালেই? তা'তে কি? মনে তো হয় না অচেনা তুমি! বার বার চেনার আদলেই জনারণ্যেই স্বপ্নাদোষ্টার প্রচ্ছায়ায় অবগাহন কর নিত্য।


কই তুমি তো মুখোশে ঢাকনি কোন কালেই? চেনার আদলেই রইলে বেঁচে অচেনা উর্বশী মোহে।
======


পুঁজিতে বিধান স্রষ্টার


কত কিছুই তো হারিয়ে যায়?
ধন, সম্পদ, আহার, নিদ্রা; সুখ বিলাস।


ফিরে আসে দুঃখ, যাতনা, ভ্রুম
পালিয়ে বেড়াই সব চাওয়া!
যেন পথে পথে উরুনচুন্ডি দিশে হারা
ভেঙেছে হাল, নাও টলমল;
ভয়াল দরিয়ার মাঝে।


ঢেউয়ের আঘাত, তীব্র ঝড়ঝঞ্ঝা
জলে ভরা টুই টুই নাও
যেন ভাসান ছোট্ট ভেলা;
এমন কূলহারা পথে
ধরেছে হাল ঐ পোড়খাওয়া মাঝি!
এবার বাঁচতে হবে! জীবন যুদ্ধে
আলস্য করে পরিহার;
মিলবে সবই যা চাওয়ার' তাও
পুঁজিতে বিধান স্রষ্টার।
======


উপস


জানি উপসে পুড়ছো
শরীর মননে যত ছত্র আছে!
হাজার বছর ধরে!
পাওয়ার তপস্যায়
করিতে দ্রোহ;
পোড়ায়ে মন শুকনা কাঠসম।


জড় আঁকড়ে বাঁধিতে জীবন
অম্ল বার্ত্যয় ঘটে।
যদি জীবনকে
বাঁধ জড় অঙ্গে!
থাকিল না কিছু তব ধামে
জীবন জীবনে বাঁধিতে
নিষ্ঠা চরাচরে।


করিতে উপস, শুদ্ধ মননে
দূর বহু দূর বাঁচিতে সহাস্যে।
=====


০৮, চৈত্র/বসন্তকাল/১৪২৩