[ অপরূপা ]
সূর্যের মিষ্টি পেলব কিরণ
ব্যালকনির দরজায় লাগানো
শিশির ভেজা কাঁচ ভেদ করে
ছুঁয়ে গেল আমার সমস্ত শরীর।
আমায় ছুঁয়ে লুটোপুটি খেয়ে
খুশিতে গড়িয়ে পড়ল মেঝেয়—
পড়তে পড়তে কানে কানে
মিষ্টি সুরে বলল আমায়,
"বুবুসোনা, ভোর হয়েছে,
ওঠো—
তোমার জন্যে প্রকৃতি
রূপের পসরা সাজিয়ে
দুহাত বাড়িয়ে ডাকছে,
তুমি এখনও ঘুমিয়ে—"
কার যেন অদৃশ্য স্পর্শে ঘুম ভাঙে,
ভোরের সোনালী আলো মেখে
ধড়ফড়িয়ে উঠে বসি
চোখ মেলি সার্সির বাইরে—
ঘুম জড়ানো চোখে ধরা দেয়
দিগন্ত জোড়া উন্মুক্ত আকাশ
আর নীল আকাশের নীচে
মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা
ঘন সবুজ মখমলি চাদরে ঢাকা
মায়াবী পাহাড়ের সারি।
গলা সোনার মত উজ্জ্বল রোদ
পাহাড়ের কোল বেয়ে
গড়িয়ে পড়েছে লেকের জলে,
নিস্তরঙ্গ জলে প্রকৃতির প্রতিবিম্ব
যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি।
হঠাৎই শনশনিয়ে বয়ে আসে
এক ঝলক ঠাণ্ডা বাতাস
আছড়ে পড়ে লেকের জলে—
নিস্তরঙ্গ জলে ঘটে প্রাণের সঞ্চার,
তরঙ্গ লহরী ছড়িয়ে পড়ে
এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে
শিহরণ তুলে হারিয়ে যায়
আমার সমস্ত সত্তায়।
প্রভাতী সূর্যের প্রথম কিরণে
ঝলমলিয়ে ওঠে লেকের জল,
প্রতিটা তরঙ্গের মাথায়,
মনে হয় কে যেন যত্ন করে
সোনার মুকুট পরিয়েছে।
এক ফালি ভেসে যাওয়া মেঘ
সাক্ষী থাকে আমার সাথে
প্রকৃতির এই অপরূপ শোভার।
আমার অপলক দৃষ্টিতে
গ্রেগরি লেকের ঝলমলে আলো
আর সদ্য ঘুম ভেঙে ওঠা
শ্রীলঙ্কার ছোট্ট পাহাড়ি শহর
অপরূপা ন্যুয়ারা-এলিয়া।
নতুন প্রভাতে নতুন জায়গায়
স্বাগত জানায় আমায়।
[কুয়েত, ১৯শে মার্চ ২০১৯]
©চিন্ময়