[ ড্রোন ]


রোজকার মত নিশুতি রাত
শুনশান চারিধার,
দূরের আলোয় ঝলমল করে
তৈল শোধনাগার।
লোক-চলাচল চোখে পড়ে কম
চরাচর শুধু চায়,
এদিক ওদিক দু-চারটা গাড়ী
হাইওয়ে দিয়ে ধায়।
শোধনাগারের ভিতরে তখন
রাতজাগা স্তব্ধতা,
নিরপত্তার ঘেরাটোপ মাঝে
স্বাভাবিক ব্যস্ততা।


রাতটা ছিলোনা পৃথক কিছুই
আর রাতগুলি মত,
নিস্তব্ধতা নামে শহরে তখন
ঘুমে ঢাকে প্রাণ যত।
সংশয়হীন টহলদারীরা
নিরাপত্তায় রত,
ঘুম ভরা চোখ ক্লান্তি তবুও
সদা রয় জাগ্রত।
সহসা বিপদ ঘন্টির ধ্বনি
সজাগ পাহারাদার,
আকাশের থেকে আগ গোলা নামে
লক্ষ্য শোধনাগার।


দীর্ঘ মেয়াদি শত্রুতা ঘিরে
লড়াইটা বারেবারে,
ইয়েমেনি হুতি ড্রোন আছড়ায়
সৌদি শোধনাগারে।
এক নিমেষেই চিত্র বদল
আগুন ছড়ায় দ্রুত,
এক লহমায় অগ্নি বলয়
ঘিরে ধরে ট্যাংক যত।
লেলিহান শিখা গ্রাস করে ফেলে
সৌদি শোধনাগার,
দাউ দাউ করে জ্বলতেই থাকে
তেলের আঁতুড়ঘর।
এখানে ওখানে অগ্নি গোলক
ঊর্ধ আকাশে ছোটে,
নিকষকালো ধোঁয়া কুন্ডলী
পাকিয়ে পাকিয়ে ওঠে।
আগুনের সাথে বিষ্ফোরণও
ক্রমাগত বেড়ে যায়,
প্রাণ যায় যত নিরাপরাধীর
প্রাণঘাতী হামলায়।


কোলাহল বাড়ে তেল কল ঘিরে
হাহাকার চারিধারে,
বাঁচার তাগিদে ছোটাছুটি বাড়ে
তৈল নগরী ঘিরে।
জিহাদি মনের কালো দিক থেকে
ধেয়ে আসে ড্রোন গোলা,
শান্তি হারায় আঁধারেতে ঢাকে
বিবেকহীনতার খেলা।
অবুঝ মানুষ চায়না বুঝতে
কেন এ অসম ভেদ,
কি যে লাভ এই ধ্বংসলীলায়
কেন এ অযথা জেদ।
দোহাই জিহাদি অনুরোধ করি
ভেবে দেখো আরবার,
প্রাণ নিয়ে খেলা থামাও এবার
পৃথিবী হোক বাঁচার।


[কুয়েত, ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৯]
©চিন্ময়


বিঃদ্রঃ সৌদি আরবের তেল শোধনাগারে ইয়েমেনের ড্রোন আক্রমণ প্রসঙ্গে লেখা। প্রসঙ্গত সৌদি আরবে চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন দিয়ে দুটি তেল শোধনাগারের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। দুটি শোধনাগারই রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত তেল কোম্পানি আরামকোর পরিচালনাধীন।