[ফিরে দেখা পুজো]


পুজো মানেই নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ভেলা,
"সূর্যকে নেয় চুরি করে ভয় দেখাবার খেলা"।
পুজো মানেই ঘাসের আগায় মুক্তো-শিশির কণা,
শিশির ভেজা পায়ের পাতা মন যেন আনমনা।
পুজো মানেই হিমের ছোঁয়া লাগে হাওয়ার 'পরে,
বাতাস ভরা শিউলি সুবাস মনকে মাতাল করে।
পুজো মানেই গোলাতে ধান মাঠ ভরা কাশফুলে,
মনের সুখে ভাসা ক'দিন সকল জ্বালা ভুলে।
পুজো মানেই ঢাঁকে কাঠি নেইকো চোখে ঘুম,
রাত পোহালেই ছুটোছুটি ফুল কুড়োবার ধুম।
পুজো মানেই চন্ডীপাঠ আর আগমনীর গান,
ভোরের বেলায় রেডিয়োতে "হে মৃন্ময়ী" গান।
পুজো মানেই সুখের শুরু দুখের অবসান,
মন মাতানো পুজোর আমেজ মাতে সবার প্রাণ।
পুজো মানেই পুজো সংখ্যা "দেশ"-এ পুজোর লেখা,
নতুন জামা জুতার সাথেই ভিড়ে ঠাকুর দেখা।
পুজো মানেই বোধন থেকে খুশির জোয়ার প্রাণে,
ঝালিয়ে নেয়া মিত্রতা আর ছুটির ছোঁয়া মনে।
পুজো মানেই আলোর মেলা রংবাহারি চমক,
রাত্রি করে ঠাকুর দেখে ফিরে বাবার ধমক।
পুজো মানেই অঞ্জলি দান সাজিয়ে বরণডালা,
একশত আট দীপ জ্বালিয়ে ধুনুচি নাচের খেলা।
পুজো মানেই "নবপত্রিকা" কলাবউ-এর স্নান,
অষ্টমীতে সন্ধিপুজোয় মাতোয়ারা সব প্রাণ।
পুজো মানেই মাহাদশমী বিজয়া সিঁদুর খেলা,
আলিঙ্গন আর চোখের জলে বিসর্জনের পালা।
পুজো মানেই শুভ বিজয়া গজা ও সন্দেশ,
মন কেমন এর পালা শুরু কাটতে না চায় রেশ।
পুজো মানেই আজ যেন নেই সেই সে দিনের প্রাণ,
শৈশবের সেই স্মৃতির পাতায় হালকা তুলির টান।


[দুবাই, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০১৯]
©চিন্ময়
পরিমার্জিত সংস্করণ