[ জরুরি অবতরণ ]


গুঞ্জন রটে ফিসফাস কানে কানে
বিমান তখন দুবাই আকাশে ভাসে,
ডানার নিচের ইঞ্জিন গেছে থেমে
ককপিট হতে বিপদ ঘোষণা আসে।
দ্রুততার সাথে উচ্চতা কমে আসে
বিমানচালক ভরসায় অবিচল,
শত জীবনের গুরুভার তার হাতে
নিরাপদে তাই ছুঁতে হবে ভূমিতল।
ব্যাকুলতা ছায় সকল আরোহী মুখে
কলরোল বাড়ে বিমানের বুকে ধীরে,
বিমানসেবিকা প্রবোধ দিয়েই বলে
পরিজন সাথে মিলিতে পারিবে ফিরে।
নেই কোনো ভয় সেবিকারা বলে পুন
ভরসায় থাকো হবে নাক কোনো ক্ষতি,
আরোহীরা মিলি ভজে শ্রীহরির নাম
তিনিই তো আজ অগতির বুঝি গতি।
অবশেষকালে এলো সে বারতা ভেসে
বিমানকে ঝাঁপ দিতে হবে ভূমিতলে
"ব্রেস ব্রেস ব্রেস" ঘোষণা বিমান জুড়ে
মাটির দিকেই বিমান এগিয়ে চলে।
প্রবল গতিতে সুবিশাল ডানা মেলে
আপৎকালীন অবতরণের পালা,
দাঁড়িয়ে নীচেতে অসংখ্য উদগ্রীব
জনমানসেতে অজানা ভয়ের দোলা।
আকাশটা ঢাকে ধোঁয়ার বলয় মাঝে
তারে ভেদ করি নজরেতে আসে ডানা,
প্রপেলার হতে আগুনের গোলা ছোটে
বুক পেতে থামে 'এমিরেটসের ছানা'।
বাঁচার তাগিদে দ্রুততায় নামে সব
তৎপরতায় আরোহী নামানো চলে,
কেউ বা পিছনে ব্যাকুল হাতের ব্যাগে
আগুন নেভাতে তৎপর দমকলে।
হুড়োহুড়ি বাড়ে বেরোতে সবার আগে
বিমান আরোহী ভিতরেতে ছিল যত,
তাড়াতাড়ি করে ঠেলে নিরাপদ দূরে
আগুন সেনানী কাজ করে চলে দ্রুত।
দৃঢ় মনোযোগে দ্রুততায় চলে ত্রাণ
আগুন সেনানী উদ্ধার করে আনে,
থেকে যায় শুধু 'জসিম' নামের সেনা
শহীদ হয়ে সে বাঁচায় আরোহীগনে।


[দুবাই, ৪ঠা অগাস্ট ২০১৬]
©চিন্ময়


বিঃ দ্রঃ - ৩রা অগাস্ট ২০১৬ এমিরেটস এয়ারলাইন্স-এর তিরুবনন্তপুরম থেকে দুবাই গামী বিমান ইকে-৫২১ এর দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ উপলক্ষে এই কবিতা। এই ঘটনায় "জসিম আল ব্লউসি" নাম এক দমকল কর্মী নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে ২৮২ জন যাত্রী সহ বিমানকর্মীদের রক্ষা করেন।