[কাঁটাতার ও ভাইফোঁটা]


রূপকথারই গল্প যেন নিঝুম চারিধার
কাঁটাতারের ও পারেতে পদ্মানদীর ধার
দামাল বালক চুপিসাড়ে সীমান্ত হয় পার
অবৈধ তা জেনেই আসে সীমান্তের এপার।
ধরাও পড়ে জওয়ান হাতে অকুতোভয় ছেলে
জানায় কারণ এপারেতে মা-বাবা তার জেলে।
বোন রয়েছে এ পারেতে বন্দীনী এক হোমে
বোনের টানে ভাইফোঁটাতে পরোয়া নেই যমে।
জওয়ানরা সব খতিয়ে দেখে করে তার বিচার
ঠিকানা তার সবশেষে হয় সংশোধনাগার।
অনড় জিদ দামাল ছেলের জানায় কঠোর পণ
জলস্পর্শ করবে না সে ফিরে-না-পেলে বোন।


এপারেতে বোনটি ছিল ভাইয়েরই পথ চেয়ে
অপেক্ষাতে কাটছিল দিন কায় মন প্রাণ দিয়ে।
মনেতে জোর আসবেই ভাই যেদিনটা ভাইফোঁটা
পড়বে ঠিকই মনের জোরে যমদুয়ারে কাঁটা।
ছেড়েই দেবে অন্ন গ্রহন ভাইয়ের ছোট বোন
ভাই কপালে ফোঁটা দিয়েই ভাঙবে নিজের পণ।


হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে পড়ে ভাই-বোনেরই পণ
উপায় খোঁজা শুরু করেন হাজার গুণীজন।
উপরমহল খবর পেয়ে দাঁড়ায় পাশে এসে
শোধনাগার হোমের মাঝে চুক্তি অবশেষে।
প্রহরাতেই পালন হবে ত্রুটিহীন আয়োজনে
ভাই কপালে পড়বে ফোঁটা ভাইফোঁটারই দিনে।
ভাই-দ্বিতীয়ার মাহেন্দ্রক্ষণে মিলন ঘটে শেষে
কাঁটাতারের এপারেতেই ভাই-বোন মেলে এসে।
এনজিওরাও পাশে দাঁড়ায় বিশাল আয়োজন
এপার ওপার নির্বিশেষে ভাইফোঁটা দেয় বোন।
ধর্ম জাতি একাকার হয় ঘটনা নজির ছাড়া
সাক্ষী থাকে এমন ফোঁটার কাঁটাতারের বেড়া।


[দুবাই, ২৯শে অক্টোবর ২০১৯]
©চিন্ময়