[ রাতপরী ]


বয়স বোধহয় বিশ কি বাইশ কিম্বা পঁচিশ হবে,
নিশি-ক্লাব পাশে দাঁড়িয়ে যুবতি একাকিনী নীরবে।
মুখে চোখে তার কামনার ছাপ সুরভিত যৌবন,
রাতের প্রহরে খুঁজে ফেরে সে যে পরিচিত দুনয়ন।
আঙুলের মাঝে সিগারেট জ্বলে নেশাতুর দুটি আঁখি,
নৈশ-ক্লাবের রাতপরী ও যে রাতজাগানিয়া পাখি।
আরো রাতপরী ঘোরাঘুরি করে আশেপাশে ইতিউতি,
দেহ নিয়ে সেথা চলবে বেসাতি যতই বাড়বে রাতি।
সহসা যুবতি পুলকিয়া ওঠে দোলা লাগে তনুমনে,
উল্লাসে ভরে নেশাতুর আঁখি মক্কেল আগমনে।
অধরে অধর দ্রুত মিলে যায় নিবিড় আলিঙ্গন,
দুষ্টুমি ভরা চাহনিতে তারে জানায় সম্ভাষণ।
দ্রুত চলে যায় যুগলমূর্তি ধেয়ে নিশি-ক্লাব পানে,
পিছে থেকে যায় সঙ্গী পরীরা মক্কেল আহরণে।
পানশালা মাঝে ঝংকার ওঠে কানে লাগে যেন তালা,
তারি সুরে তালে কোমর দুলিয়ে নেচে চলে যায় বালা।
চারিদিকে চলে মদিরা ফোয়ারা নেশামাখা হাতছানি
দূরের মঞ্চে কামনা ছড়ায় রাতপরীদের রানি।
স্বল্প বসনে নিজ তনু ঢাকি আরো যত রাতপরী
ভরা যৌবনে নৃত্যে বিভোর কেটে যায় বিভাবরী।
নিশি যত বাড়ে ক্লাব তত জমে নেশা ঢুলুঢুলু আঁখি,
আলুথালু বেশে কুহকী মায়ায় মাতে যত চখাচখি।
আলো-আঁধারিতে মত্ত পরীরা নেশার পারদ চড়ে
বেসামাল দেহে টলমল পায়ে গায়ে ঢলে ঢলে পড়ে।
ধীরে ধীরে নেশা ক্রমশ ছড়ায় রাত্রি ঘনায় যত,
রাতের সাথীকে বাহুডোরে নিয়ে জড়ায় যে যার মত।
নিশি ঘনাইলে নীরবতা নামে থামে কলরব যত,
একে একে ধীরে পানশালা ছাড়ে চখাচখি ছিল যত।
রাতের জড়তা ধীরে ধীরে কাটে ডাক দিয়ে যায় ভোর,
ক্লাব ফাঁকা হয় স্তব্ধতা নামে থাকে মদিরার ঘোর।
বাহুডোরে বেড়ি নিবিড় আবেশে চুম্বন আঁকে বালা,
রাতের লালসা সারা দেহে মেখে এবার ফেরার পালা।।


[কুয়েত, ১৯শে জানুয়ারি ২০১৮]
©চিন্ময়