[সত্যের জয়]


মিটলো কথার দেয়া-নেয়া সব
ছেলে-মেয়েদের বাড়ি
মেয়েটি তখনো কলেজ পড়ুয়া
স্বপ্ন দুচোখে তারই।


দিন কেটে যায় চেনা-জানা বাড়ে
ছেলে নয় সমব্যথী
মেয়ে বুঝে যায় এ ছেলে হবেনা
তার মননের সাথী।


ছেলেটি আসলে বাতিক গ্রস্ত
সন্দেহ প্রতি পলে
বউ তার কাছে ক্রীতদাসী সম
জায়গা পায়ের তলে।


একথা আগেই বুঝে ছিল মেয়ে
প্রতিবাদী তাই ছিল
বাবার অনড় মেজাজের কাছে
তবু পরাজিত হল।


প্রতিবাদী মেয়ে চোখের জলেতে
পরালো বরণ মালা
বাবার জিদের জয়লাভ হল
মেয়ের জুটলো জ্বালা।


মহাধুমধামে বিয়ে হয় সারা
চারিধারে খুশি ভরা
মেয়ের কপালে চিন্তার ভাঁজ
একসাথে বাস করা।


ছেলে সেতো নয় যমদূত যেন
অতি নচ্ছার বটে
কোন কিছুতেই অমত হলেই
ভাঙচুর মার জোটে।


উঠতে বসতে বাপ বাপান্ত
সাথে কিল-চড়-ঘুষি
ভাবখানা যেন বউটা কুলটা
পায়ের তলেতে ঠুসি।


ঘরের বউটি শত ঘাত সয়ে
শুধু লেখালেখি করে
বই মুখে দিয়ে দিন কেটে যায়
একাকী বিজন ঘরে।


ছেলেটির কাছে এ সকলই বৃথা
মতলব কাজে ফাঁকি
উৎপীড়নটা ক্রমে বাড়ে তাই
সাথে চলে বকাবকি।


চরম শাস্তি দিতে চায় বউয়ে
খোঁজ চলে চুপিচুপি
একদিন রাতে ছদ্ম রাগেতে
পোড়ায় পাণ্ডুলিপি।


পিশাচ উল্লাসে নেচে ওঠে শেষে
শুরু হয় সাথে মার
এলোমেলো ভাবে লাথালাথি চলে
বেড়ে চলে অনাচার।


অজ্ঞান মেয়ে লুটায় মাটিতে
মেঝেতে রুধির ধারা
ছেলেটির চোখে ভয়েরই ছায়া
যেন পাগলের পারা।


অবশেষে ঘর আলো করে আসে
ফুটফুটে এক ছেলে
দুখিনী মেয়েটা ছেলে আগলায়
একাকিনী প্রাণ ঢেলে ।


দেখতে দেখতে বছর ফুরায়
বড় হয় ক্রমে ছেলে
মা'র অপমান শোধ নিতে চায়
বাবাকে দূরেতে ঠেলে।


মেয়ে শুরু করে লেখালেখি ফের
বুকে বল আজ ছেলে
ছেলে বলে তারে কোনো ভয় নেই
সাহসে এগিয়ে গেলে।


মায়ের কলমে ফুটে ওঠে ধীরে
হৃদয়ের ইতিকথা
মনের গভীরে লুকানো ব্যথার
নিদারুণ শোকগাথা।


অবশেষে জয় দুখিনী মায়ের
ভীরুতা পিছনে ফেলে
নিজের দোষেই একাকী সে বর
হতাশার ঘোলা জলে।।


[কোলকাতা-দুবাই, আকাশপথ,
১৯শে অক্টোবর ২০১৯]
©চিন্ময়