[এক সপ্তাহ বিরতির পর আবার কবিতার আসরে ফিরে এসেছি]


[তিস্তা পারের কথা]


দিনের অন্তিমকাল
দিনমণির দিনের কাজ সেরে
ঘরে ফেরার প্রস্তুতি।
অস্তাচল সূর্যের রক্তিম আভা
পূর্ণ বিস্তার বনানীর প্রান্তে—
গলন্ত লাভার প্রবাহ তিস্তার জলে
ধীর লয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে
সূর্যের শেষ রক্তিম আভা
রক্তাভ তিস্তার সফেদ সফেন।


বেলা পড়ে এল তিস্তা পারে
রক্তে রাঙা তিস্তার ঢেউয়ের উপর
লখীন্দরের কল্পনার ভেলা
হারিয়ে যায় দৃষ্টির অন্তরালে।
দুখিনী বেহুলার কপালের সিন্দুর
মুছে যায় তিস্তার জলে।
পাথরের বুকে জমে থাকা অভিমান
ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ে তিস্তায়।
পাথরে নদীতে কানাকানি চলে
ফিসফিসানি চলে পাড়ের সাথে
বুক চাপা কান্না মিশে যায়
তিস্তার রক্তিম স্রোতে।


ঘন সবুজ বনানীর বুক চিরে
ছোট্ট এক পাহাড়ি ঝর্ণা
তির তির করে পাহাড়ের গা-বেয়ে
কলকল রবে আছড়ে পড়ে
অনতি গভীর ঝর্ণা কুম্ভে
উপচে পড়া সে জলের স্রোত
তিনটি ধারায় ভাগ হয়ে
বিলীন তিস্তার দেহে।


অদ্ভুত এক প্রশান্তি ছায় চরাচর জুড়ে
ঝুলন্ত তারের সাঁকোর ছায়া
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয় তিস্তার বুকে
রাতচরা পাখিদের ভোর হয়
শিস দিয়ে উড়ে যায় মাথার উপর;
সাঁঝবাতি জ্বলে ওঠে তিস্তার পারে
সন্ধ্যাকে বুকে নিয়ে কালো হয় জল
তিস্তা বয়ে চলে ছলাৎ ছল।


[বিদ্যাথাং, ১৪ই অক্টোবর ২০১৯]
©চিন্ময়