আমার জগত, শব্দের জগত মানে আমি বেঁচে থাকি ভাষা আর অস্তিত্বের মিলন মেলায় আর আমি বিশ্বাস করি জ্ঞান হল মানুষের ভাষাগত দক্ষতার প্রতিফলন মাত্র; তাই যে মানুষ ভাষাগত দক্ষতায় যতোটা উঁচুতে তার জ্ঞানেন্দ্রিয়ও ততোটা উঁচুতে ভেসে বেড়ায়। আর একজন কবি হচ্ছে একটা মাছির মতন সদায় সচেতন, সে তার জ্ঞান চক্ষু দিয়ে বাড়ন্ত দুনিয়ার, বাড়ন্ত সম্ভাবনার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অভ্যস্ত। তাই যে মানুষ(বিনীত ভাবে বিনীত) নিজের নির্লিপ্ত হৃদয় গহীন থেকে কবিতা লিখে যায় অনবরত তার কি আর পার্থিব প্রতিষ্ঠানের স্বীকারপত্রের অপেক্ষায় থাকতে হয়! বল কবি।
বল কবি, তুমি এই জগতে বার বার আসছো কেন? কিই বা তার উদ্দেশ্য? হ্যাঁ তোমার উদ্দেশ্য শুধু একটায়, তোমার এই বুড়ো আত্মার বিশুদ্ধকরন; বিশুদ্ধকরন! হ্যাঁ, জন্ম থাকে জন্মান্তরের ধারায় তোমার এই পবিত্র আত্মাকে ঘিরে যে ধুলোর পাহাড় জমতে শুরু করেছিলো, তোমার সচেতনতার আড়ালে, এখন সময় এসেছে সেগুলো উৎপাটনের। তাই তোমাকে হতে হবে একজন বিশুদ্ধ যোগী, ব্রহ্মচারী; তারপর তুমি হলেও হতে পারো বিশুদ্ধ কবি।  
তাই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোহনা থেকে মানে কৈশোর থেকে আমার কবি হবার যাত্রা শুরু হয়েছিলো আর সে পথ আমি বেছে নিয়েছিলাম একটা অবধারিত প্রক্রিয়ার ধারায়। কি এমন ঘটেছিলো যে তোমাকে বাধ্য হয়ে বেছে নিতে হবে এই কঙ্কটময় কবিতার জগতকে! বল কবি, বল...। তবে আমিই বলি তুমি শোন আর যেহেতু এই আলাপচারিতাগুলি কাগজের ওপর শরীরী রুপ পাচ্ছে তাই সত্যটা সরাসরি না বলে আড়াআড়ি বলাই উত্তম; এই কথাটা তুমি নোট করে রাখতে পারো "tell all the truth but tell it slant". দ্যাখো, সূর্য যখন আড়াআড়ি ভাবে পড়ে তখনই আমরা বেড়িয়ে পড়ি প্রকৃতির সৌন্দর্যে পা বাড়াতে, উদযাপন করি তার মহত্ত্ব নরম ঘাসের ওপর, নৈবদ্য দান করি পার্থিব সুর যেগুলো আমরা ক্রমাগত চুরি করেই যাচ্ছি স্বর্গ থেকে, ঈশ্বরের কাছে সেগুলি আসলেই মিষ্টি চুরির মতই এবং উলটো আমরাও আশীর্বাদ পুষ্ট হই কবি, বোঝাতে পেরেছি! ওহ, বলতে বলতে অনেক দূর চলে গেছি, এবার তবে মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি; হ্যাঁ আমি বড়ই আদরের সন্তান ছিলাম, আর ভাইদের মধ্যেও ছিলাম কনিষ্ঠ আর আমার মনটাও ছিল নরম কাদামাটির মতন, আর বয়ঃসন্ধিকালের বিবর্তনের ধারায় হঠাৎ অসুস্থতার সঙ্গে নানান অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সাথে হয়তো আমি মানিয়ে নিতে পারিনি অপ্রস্তুত যৌবনে কিন্তু তা আমাকে সোজাসাপটা কবি হওয়ার পথ বাতলে দিয়েছে নিঃসন্দেহে।
২৪শে জুন