জীবনের বিজয় মুকুট শেষ কথা নয়, জন্ম থেকে পথ ঘুরে ঘুরে মৃত্যুর দিকে ধায় আপন ভাবনায়। ব্যক্তি ভাবনায় কেউ কোটিপতি হয় আবার কঠিন অসুখে মারা যায়। এটাই তার জীবনের শেষ কথা, যাহা মানুষকে ভাবায় দেয় ব্যথা। কর্মের যে শীর্ষেই ওঠো না কেন, জীবনটা সেই কর্মেরই সংক্ষিপ্তসার বই কিছু নয়। কাজের শেষে যে আনন্দ হয়, তাহাও কি সামান্য নয়? সম্পদের প্রাচুর্যে অভ্যস্ত হলে আর সেই মুহূর্তে অসুস্থ হয়ে বিছানায় শুয়ে অতীত জীবন টাকে ভাবতে গেলে, যে স্বীকৃতি তুমি পেয়েছো তাতে খানিকটা গর্বিত হতেই পারো। কিন্তু আসন্ন মৃত্যুর কাছে তার কি কোন মূল্য আছে? তুমি তোমার অর্থের জোরে কাজের লোক নানান ভাবে নিয়োগ করতে পারো কিন্তু তোমার মৃত্যুশয্যায় অর্থ দিয়ে নিজের পরিবর্তে সব দায় কর্মচারীকে দিতে পারবে কি? তোমার হয়ে তোমার অসুস্থতা, মৃত্যু যন্ত্রণা অন্য কেউ বহন করবে কি? তোমার আনন্দ তোমার সুখ, তোমার বেদনা, তোমার দুঃখ, হাসি কষ্টে শুধুই দেখবে তোমার মুখ।
            হারানো সম্পদ তুমি ফিরে পেতে পারো কিন্তু শরীর -মন, জীবন -ধন, একবার হারালে কালের পেক্ষাপটে পাবে না ফিরে আর, এটাই এই জীবনে নিয়ম তার। যদি কেউ সুস্থ হবার তাগিদে অস্ত্রোপচারের ঘরে ঢোকে তখন তাঁর মনে হবে আরো কত কাজ পড়ে রয়েছে পশ্চাতে। এই সংকটকালে যে চেতনা জাগিয়ে দিল তোমার মন, বুঝি তারই নাম জীবন। এই দেহটা নিয়ে তুমি যেখানেই যাও না কেন, তোমার মনে হবে ঐ অবস্থানটাই জীবনে সঠিক এবং সময়ের প্রেক্ষাপটে বাস্তব আর মনের মধ্যে তখনই আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের জন্য এর মাঝে জেগে উঠবে ভালোবাসার উত্তাল ঢেউ; তার বাইরে যেতে পারি না আমরা কেউ। অতীতের কথা ভেবে কখনো চোখের পাতায় অশ্রু আসে নেমে। তখন মনে হবে নিজের ভালো ভাবার সাথে সাথে অন্যের আনন্দের কিংবা সুখের কথা ভাবা উচিত ছিল মনে। এখন সেই যুদ্ধ চলে মনের সাথে প্রাণের। বয় বৃদ্ধির সাথে সাথে অভিজ্ঞতাও ছুটে আসে ঐ সত্যের মুখোমুখি হয়ে বুঝতে শেখে আরো কত কিছু করণীয় তাহার ছিল, সময়, দেহ, মন তাহা কোথায় দিল?
                   কত দামি দামি ঘড়ি পড়ে হাতে তবু সঠিক সময়, সঠিক কাজ হলো না তাতে। না পারার জ্বালায় আজ কষ্ট হয় মনে। টাকার জোরে সম্পদের জোরে ভালো ভালো দামি গাড়ি চরে আর ছুটে চলে দীর্ঘ পথে। আবার কেউ পায়ে হেঁটে কষ্ট করে এগিয়ে চলে ওই সেই একই গন্তব্যে পৌঁছাবে বলে।
                    কেউ পোলাউ বিরানির সাথে দামি মদ খায় বোতলে বোতলে শীতল ঘরে বসে। আবার কেউবা নুন দিয়ে পান্তা খায় মাঠে চরা রোদে বসে। আনন্দ সুখ সমান উভয়ের কাছে, এই জীবনকে ভালোবেসে।
                        বুঝতে হবে অনুভবে বস্তুজগৎ মানুষকে শান্তি দিতে পারে না, শান্তি থাকে মানুষের অন্তরের মাঝে আপন কাজে।
             তুমি যতই উঁচুতে ওঠো না কেন? অর্থ সম্পদের সেই শীর্ষচূড়ায়, তোমাকে একদিন নেমে আসতেই হবে এই মাটিতে,
সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে উঁচু-নিচু ধরার পথে। সে কথাটা একদিন বুঝতে পারবে আপন চেতনাতে।
                 পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ আর স্বর্গ মর্ত্যে সাথী বন্ধু ভাই বোন যারা আছে তোমার কাছে, যাদের সাথে হাসো, গাও, গল্প করো সেই সুখ পরম সুখ, কাছে ঘেষতে দেয় না জীবনে কোন দুখ। তাই বলি- "জীবনে কাউকে ভালোবেসে, ধনী হওয়ার উপদেশ দিও না। শিক্ষা দাও জ্ঞানী হওয়ার, শিক্ষা দাও সুখী হওয়ার। জীবনে আর কিছু থাকবে না পরম পাওয়ার।
                যখন তারা বড় হবে তখন তারা বুঝতে পারবে, জানতে পারবে, চিনতে পারবে, দাম বড় নয়, গুন বড়। তেমনি জানতে হবে শিখতে হবে, প্রকার ভেদে কত কত খাবার আছে; কোনটা ভালো কোনটা খারাপ, কোন খাবারে স্বাস্থ্য থাকে ভালো? যেমন আমরা ওষুধ খাই, খাদ্য টাও দেহের পক্ষে হয় যে তাই।
                 যে তোমারে ভালবাসে যেওনা বন্ধু তারে ছেড়ে, শত প্রলোভন আসলে পরে। এমন বন্ধু পাবে না আর না খুললে হৃদয় দোর, বুঝতে পারবে তুমি বন্ধু- ভবিষ্যতে রঙিন স্বপ্নের কাটলে ঘোর। মনের ও দেহের চাহিদাটা বুঝবে আরও সেই কঠিন সময় এলে পরে, যখন আলো জ্বলবে না আর তোমার ঘরে। কোনো ভাবেই মিটবেনা তা, যতই তুমি পাওনা ব্যথা। মানুষ আর মানবতায় পার্থক্যটা বুঝবে হেথায়। অল্প সংখ্যক মানুষ ধরায় বুঝতে পারে, পার্থক্যটা নিজের করে। অতীতের সেই চিরন্তন দর্শনা বলে- " জন্মে ভালোবাসা আর মৃত্যুতে ভালোবাসা মাঝের পথেটা শুধুই যাওয়া আসা"। নাতিদীর্ঘ পথ তাড়াতাড়ি যদি যেতে চাও তবেই একাই পা বাড়াও আর দূরের পথে যেতে হলে সাথে তুমি বন্ধু নেও। এই জীবনে বিজয় মুকুট পেতে হলে প্রকৃতির সাথে থাকো মিশে, এই টুকুই বলবো শেষে।


৫ ই বৈশাখ,১৪২৭,
ইং ১৮/০৪/২০২০,
শনিবার, সকাল ৯টা। ৯৮৫, ২৩/০৪/২০২০।