অলস এক অপরাহ্নে দাঁড়িছিলাম কীর্তনখোলার বাঁকে
ধানসিঁড়ি নদী মিলিত হয় যেখানটাতে ,
হঠাৎ এক ঝাঁক সাদা শঙ্খচিল উড়ে এল
সফেদ ঢেউয়ে ঘেঁষে ঘেঁষে ;
আমায় দেখে নদীটি ধীরে ধীরে সমুদ্রে পরিণত হল
মুহূর্তেই তার প্রাণের জোয়ার আমার ভাসিয়ে নিল!


আকাশ পানে দৃষ্টিপাতেই আকাশটা বদলে যেতে থাকল
প্রচণ্ড নীল ,সাদা মেঘের শুভ্রতা
আস্তে আস্তে ;হতে থাকলো শত রঙের শতরঞ্জি
যেন আজ তার যৌবন  এল  নবরঙে !


দিগন্ত জোড়া বালুচর হতে থাকলো সবুজ মরুদ্যান
অবোধ বাতাস হয়ে গেল দক্ষিণা সমীরণ ,
তার শান্ত ,হিমেল পরশ আমায় এমন করে
ধুয়ে দিল ,আমি হয়ে উঠলাম সবুজ স্নাত পাতার বাঁশি ;
এখন উঠবে মোহময়ী সুর !


দাপুটে সূর্যটা দীঘল হেসে ম্লান হয়ে অস্তমিত হল
হয়তোবা  চন্দ্রটাকে সুযোগ দিয়ে গেলো ,
পশ্চাৎপানে ফিরতেই দেখি এক সম্মোহনী মায়াজাল
মুচকি হেসে আমায় ভাসিয়ে দিল স্নিগ্ধ শোভায়
পৌষের কুহেলিকুহকের মায়াবি হাতছানিতে
আমায় কে ডাকছে,
ঝাপসা আলোর ভেলায় বসে !


সবুজ ঘন ঘাসের বুকে
হাত বুলাতেই আমায় হেচকা টানে জড়িয়ে নিল বুকে  ,
এক অস্পষ্ট ধূলি মাখা হাত
এখানে কী কোন অশীরিরি ছিল !
আমার স্বগোতুক্তি ।


তক্ষনাৎ শুনতে পাই ,এক পৌরুষ কণ্ঠ
  আমি অশীরিরি নই ,জীবনানন্দ দাশ ;


বাতাসে বাজে সেই কণ্ঠধ্বনি , তার স্বরচিত কবিতার
"আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায় ,
হয়ত মানুষ নয় হয়তবা শঙ্খচিল শালিকের বেশে ...


পরক্ষণেই শঙ্খচিল হয়ে ধানসিঁড়ির দিকে
মিলিয়ে গেল !


বুনোহাঁসের খচখচ শব্দে আমার সম্বিৎ ফিরে এলো!