ওগো মোর নিরব বসুন্ধরা
তোমারে দেখিতেছে চোখ মেলে মোর নয়ন তারা।
তোমার হাঁসিতে সকাল বেলায় পাখিদের ডাকে সূর্য উঠে
তোমার খুশিতে হাসি মুখে দীঘিতে পদ্ম ফোটে।
তুমি পেলে শান্ত মনের মাঝেতে দুঃখ
কাল মেঘ তোমাকে ঘিরে দাঁড়ায় হয়ে রুক্ষ।
তোমার চোখের কোনে এলে এক ফোঁটা জল
আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরে অনরগল।
গোধুলির শেষে সুন্দরী বালিকার বেশে
চাঁদ আসে মাথার ওপর মিষ্টি মিষ্টি হেসে।
গরমের দিনে ঝিঝি পোকার গানে সন্ধ্যাবেলা
ঝাঁউ গাছের উপর বসে মিটি মিটি আলোয় জোনাকিদের মেলা।
শুকনো পাতা ডাল থেকে নেমে আসে তোমার টানে
হালকা তুলোর মত মেঘেরা ভেসে বেড়ায় নীল গগন পানে।
শীতের দিনে ঘিরে রাখে তোমায় ঘন কুয়াশার চাদর
ছোট্ট বৃক্ষদের আগলে রাখ বুকের মাঝে দিয়ে কত স্নেহ মমতা আদর।
সূর্যের আল আসে যখন কুয়াশা চিরে তোমার বুকেতে
ছোট্ট ঘাসেরা মাথা নেড়ে খেলা করে মনের সুখেতে।
আষাঢের নতুন রিমঝিম বর্ষার জলে
হাঁসেরা খেলা করে পুকুরের মাঝে ডানা মেলে।
শ্রাবনের দিনে তোমার বুকের উপর থাকা আমের বাগানে
মৌমাছি কত গান শুনিয়ে যায় ফুলেদের কানে, কানে।
তোমার বুক চিরে বয়ে যায় কত কূল হীন আঁকা বাঁকা নদী
তবুও নয়ন ভরা জল নিয়ে চুপ করে আছ ওগো মোর দরদি।
ওগো মোর নীরব জননী
তোমার সম্নান আমরা রাখিতে পারিনি।
তোমার উপর রেখেছি এই ধূলা বালি মাখা পা
তুমি শুধু আমার নয় এই জগতের সবার মা।
ওগো মোর জগত জননী ক্ষমা কর মোরে
থাকতে চাই আমি এই কাদা মাটির ঘরে।
তোমার স্নেহ ময়ী বুকের উপর।