বৃষ্টি এলেই মনে পড়ে তোমার কথা।
সেদিন এমনই বৃষ্টি ঝরা সন্ধ্যায়,
বসেছিলাম আনমনে বারান্দায়।
গুন গুন করে গলায় সুর তুলছিলাম;
"আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে,"
চোখ দুটি আধো বুঁজা ছিলো,
কানে আসছিল বৃষ্টির নূপুরের রিনিঝিনি ধ্বনি।
হটাত তুমি কাক ভেজা হয়ে হেলতে দুলতে
আমার সামনে এলে,
আচমকা কিছু বলে ফেললে-
কিছু বলার ছিলো আমার, তাও শুনলে না।


"ভালোবাসিস আমায়?"


এ প্রশ্নে হতভম্ব আমি প্রশ্ন করি তোমায়,
ভালোবাসা!!!
সেটা আবার কি গো?
থাক তোকে বুঝতে হবে না,এই নে এগুলো তোর।
বলেই দৌড়ে চলে গেলে।
আমার হাতের মুঠোয় তোমার দেয়া
ভেজা গাঁদা ফুল,সাথে একটা আধ-ভেজা কাগজ।
ফুল গুলো সন্তর্পণে রেখে,ভাঁজ খুললাম কাগজের।
ধুৎ ছাই সব ভিজে গেছে!!
একটি কথা স্পষ্ট হয়ে আছে এখনও,
" ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি,
তুই আমার প্রিয়তমা হবি?"
প্রিয়তমা (!) শব্দটা আমার কাছে একেবারেই নতুন,আনকোরা।
নিচের ঠোঁট কামড়ে অনেকক্ষণ ধরে বোঝার চেষ্টা করলাম,
কিন্তু কিভাবে বুঝবো বলো?
তখন আমি যে এক উচ্ছল,দুরন্ত কিশোরী!
যৌবনের আঙ্গিনাতে পা ছুঁই ছুঁই করছে,
তাই বোঝা আর হল না।
কাগজটা নির্দ্বিধায় মা'র হাতে তুলে দিয়ে
শব্দটার মানে জানতে চাইলাম,
মা আমার কপট রাগ দেখিয়ে আমাকে শাসালেন।
যা হবার তাই হল,দুই পরিবারে শুরু হল এক
অনিবার্য নিরব সংঘাত;
কি অপরাধ ছিলো আমার?
তুমি আমায় দেখে অভিমানে,
ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিলে!!
আজও এমন ঝুম বৃষ্টিতে মনে মনে ভাবি,
বসে আছি সেই বারান্দায়,হঠাৎ তুমি এলে-
এবার আমি দিনশেষে সন্ধ্যার আকাশে
অস্তমিত সুর্যের ন্যায় নতজানু হয়ে বলতে চাই,


" ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি।
ভালোবাসবে তো আমায়?"