কোরাস : হে নির্যাতিতা নারী , এখন থেকে  তোমার নব জন্ম হলো । তোমার নাকে মুখের নল গুলো খুলে দেবার পর তোমার যখন নতুন করে অন্নপ্রাশন হলো , তার সাথেই তোমার নতুন নামকরণ হোল বহ্নিশিখা ।
নারী : বহ্নিশিখা ! আমার পুরনো নামটা তো ভালই ছিল । ওই নামেই তো ডেকে, রোজ সকালে মা আমার ঘুম ভাঙাত' | আমাদের পোষা টিয়াটা, ও ও আমার নাম ধরে ডাকত আর ব'লত, "পড়তে বোসো "।
কোরাস : সে নামে তোমাকে আর ডাকা যাবে না । সে নামের সাথে তোমার , তোমার পরিবারের সবার অনেক লজ্জা জড়িয়ে আছে ।
নারী : লজ্জা !  যারা আমাকে আঘাত করে  - আপমান করে পুলিস , ডাক্তার আর রিপোর্টারদের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পালিয়ে গেলো, তারা তো আমার নামও জানত না। তাহলে ওরা আমার নামটা নোংরা করে দিলো কি করে ?
কোরাস : ভুলে যাও পুরনো নাম , নতুন পরিচয়ে নতুন করে বাঁচো ।
নারী : আবার যদি কলেজ থেকে ফেরার পথে , অন্ধকারের সুযোগে আরেক দল নেকড়ে লাফিয়ে পড়ে । তোমরা আবার আমার নতুন নাম দেবে ? নাকি ভ্রুকুটি করে বলবে , নষ্ট মেয়ে, তোর্ সাথেই বার বার কেন ? মেয়েরা তো গাছের ফল , পোকা লাগলেই নষ্ট ।
কোরাস : আমাদের ভুল বুঝনা । আমরা তোমার যন্ত্রনা বুঝি ।
নারী : বোঝো ! সত্যি । আমি তো তোমাদের একদম বুঝি না । ভুল - ঠিক কিচ্ছু না ।
কোরাস : আমরা তোমার সাথে আছি, বহ্নিশিখা । তোমার জন্য আমরা মোমবাতি হাতে হেঁটেছি , প্রতিবাদের গান গেয়েছি , ছবিতে ছবিতে দেয়াল ভরিয়েছি ।
নারী : তোমাদের সে  মোমবাতির আলো আমাদের গ্রামে পৌঁছায়নি | আমাদের যাতায়াতের পথ এখনো অন্ধকার আর তোমাদের পথে, আলোর নীচেই বাহারি আলোর ত্রিশূল । তোমরা সবাই আমার নির্যাতনের ছবি আঁকলে, কি নিষ্ঠুর সব কালো কালো থাবার ছবি । কই আমার কালকের সেই জীবনটা, যা তোমাদের দেয়া এই নতুন নাম নিয়ে সুন্দর হবে, সেই ছবিতো একটাও দেখলাম না ।
কোরাস : বাঁচতে শেখো বহ্নিশিখা, বাঁচতে বড় সুখ । সময়ের ঠান্ডা মলমে সব জ্বালা জুড়াবে , বাঁচার আনন্দে বাঁচো  বহ্নিশিখা ।
নারী : কি করে আর সাধারণ হয়ে বাঁচি ? তোমরা যে আমাকে বহ্নিশিখা বানালে ! আগুন জ্বালানই এখন আমার জীবন । আমি যে আগুন জ্বালাব , সেই  আগুনে পুড়ে সব শুদ্ধ হোক , পবিত্র হোক ।