দর্পণ সাক্ষী আছে
আমি যখন তার সামনে দাঁড়াই -
সে আমায় মুখ ভেঙ্গচে বিদ্রূপ করে।
দর্পণ সাক্ষী আছে
আমি তাকে দোষ দিই না কোনোদিন,
কারন আমি জানি আমি কুৎসিত।
দর্পণ সাক্ষী আছে
আমার ঠোঁটে একটা তিল আছে,
লোকে বলে সৌন্দর্যবিন্দু,
আমি বলি,
ওটা আমার কুৎসিত চেহারাকে ব্যাঙ্গ করে মাত্র।
দর্পণ সাক্ষী আছে
চোখের তারা নীল,
কিন্তু এই কুৎসিত চেহারায় সে বড় বেমানান।
দর্পণ সাক্ষী আছে
ঘন কালো চুল আমার,
কিন্তু তেলের অভাবে বড় শুষ্ক রুক্ষ,
পাখির নীড়।
দর্পণ সাক্ষী আছে
আমার চামড়ার রঙ কালো
চকচকে উজ্জ্বল,
অন্ধকার আমাকে দেখে পালায়-
দর্পণ সাক্ষী আছে
গরুর ঠোঁটের মত আমার ঠোঁট,
মনে হয় যেন আগুনে পুড়ে সেদ্ধ হয়ে গেছে।
দর্পণ সাক্ষী আছে
আমার চিড়েচেপ্টা বুকের দিকে কেউ ভুলেও তাকায় না,
আমিও তা নিয়ে কোনো প্রতিবাদ করি না-
অন্যদের মতো।
কিন্তু আমি ভালোবাসি রাস্তার ঐ ছেলে গুলোকে,
যারা পথের ধারে না খেতে পেয়ে অনাহারে দিন কাটায়-
আমি সারাদিন কাজ করে,খাওয়ার নিয়ে যাই-
চিকিৎসার জন্য ওষুধ নিয়ে যাই,
তাদের সঙ্গে খেলা করি,
গান গাই, লেখা পড়া করি -
ওরা আমার রূপ নিয়ে প্রশ্ন করে না?
আমাকে দেখে হাসে না,
আমি সময় মত না গেলে রাস্তায় অপেক্ষা করে।
আমার জ্বর হলে আমার মাথায় জল পট্টি দেয়।
তোমাদের দর্পণের মত ভ্যাঙায় না।
কুৎসিত ইঙ্গিত করে না।
দর্পণ সাক্ষী আছে
আমি তার কাছে কোনোদিন সুন্দর হয়ে ওঠার টিপ্স চাইনি
দর্পণ সাক্ষী আছে
কোনোদিন চোখ বন্ধ করে তার সামনে কেঁদে বলিনি,
কেন আমাকে এমন করে গড়লে ভগবান।
দর্পণ আমার বুক দেখেছে -
সকলে বলে তার নিচে একটা ফর্সা হৃদয় আছে -
সেটা বোধ হয় দেখতে পায় নি।।
===