দুই মেয়ে।।
অফিস থেকে ফিরে দেখি
মম এর মুখটা ভারি।
কপালের ওপর ভ্রু টা তুলে
বলছে আড়ি আড়ি।।
দুই বোনেতে ঝগড়া লেগে
প্রচন্ড দাপাদাপি।
তখনও তারা খায়নি কো ভাত
করছে লাফালাফি।।
কারনটা কি? করলে জিঞ্জেস
মুখ ফুলিয়ে বলে।
বোনু আমার প্রজেক্ট খানা
কেন ভেঙ্গে দিলে।।
মারাত্মক এক ঝগড়া দেখে
পড়লো মনে আজ।
ভাই বোনেতে ঝগড়া ছিল
যেন পড়তো বাজ।
ডালের বাটির টানাটানি
উল্টে যেত যেই।
বাবা এসে মারতো পিঁড়ে
মাথার উপরেই।।
ফাটল মাথা মাঝখানে তে
রক্তে ভরলো ভাত।
কাশীপুরের হাসপাতালে
কাটল সেদিন রাত।।
সাত সাতটা সেলাই নিয়ে
স্কুল ছুটি বেশ।
এই না হলে সংসার ভাই
এই না গোটা দেশ।
আমার বাপু দুটি মেয়ে
সাত বছরের ফাঁক।
ছোটটি খুব দুষ্টু মেয়ে
পাড়বে বৃথা হাঁক।।
অকারনে করবে লড়াই
ফেলবে ভেঙে সব।
ধরলে দিদি সেটা নিয়ে
করবে কলরব।।
চালাক এত বুঝবে সবে
একটা গল্প বলি।
মন দিয়ে বুঝতে হবে
বিপদ ডেলি ডেলি।
ডিম এনেছি একটা ডজন
ফ্রিজের মধ্যে রাখি।
একটি করে উধাও হয়
প্রতিটা দিন দেখি।।
গিন্নী বলে কি হলো গো
যাচ্ছে কোথায় ডিম?
ভয়ে ভয়ে প্রানটা কাঁপে
গা হয়ে যায় হিম।।
আঁশটে গন্ধে ভরে গেল
সারা ঘর দোর।
এ কেমন চলছে খেলা
এ কেমন চোর?
টাকা নয় পয়সা নয়
ডিম করছে চুরি?
সারা ঘরে চোকলা পড়ে
সবই চোখে হেরি।
ভাবলাম মনে মম টা বুঝি
অমলেট করে খায়।
তাই না হলে স্নানের ঘরে
মৌমি চোকলা খুঁজে পায়?
পরের দিনেও একই কান্ড
আর একটি ডিম নাই।
মৌমি বলে জানলা পাশে
চোকলা খুঁজে পাই।
ভারি বিপদ, কেমন করে
করব সমাধান।
ভয়ে ভয়ে দিন কাটে ভাই
আর থাকে না মান।
পরেরদিন ই আবার একটি
ডিমের হলো চুরি।
কোথায় ডিম কোথায় ডিম
সুধু খুঁজে মরি।।
গিন্নী বলে এই  দেখেছি
সবই সঠিক ছিল।
কেমন করে কমল যে ডিম
তবে কোথায় গেল?
ও যে গো মা বাথরুমে
চোকলা পাওয়া গেল।
মৌমি বলে ওরে দি-ভাই
আবার ডিম নাই।
সবাই মিলে ভয়ে মরি
চোর কেমনে পাই।।
মা ধরল চেপে এবার
মৌমি বলতো দেখি
হঠাৎ হঠাৎ কেন ফ্রিজ
খুলতে তোরে দেখি।
মৌমি বলে গরম বলে
বরফ মুখে মাখি
ডিম নিয়ে মা করব কি?
ভরলো জলে আঁখি।
কান্না দিয়ে ভুলিয়ে দিল
মায়ের সন্দেহ।
এমন করে বলল মেয়ে
নিশ্চই অন্য কেহ।।
তবুও মনে সন্দহ ছিল
ওই ব্যটা চোর।
নইলে কেন ফ্রিজ খুলে
দেখবে ভোর ভোর।।
ডিম চুরি করে বেটি
সাধু সাজে কেন?
এমন ভাবে বলছে দেখো
উপায় নেইকো যেন।
ঘন্টা খানিক কেটে গেল
মৌমি নেইতো কাছে
খোঁজ খোঁজ দেখা গেল
ফ্রিজে কাছেই আছে।
হাতের মুঠোয় ডিম নিয়েছে
ভাঙবে বলে সেটা।
বলছে আবার দেখছি আমি
বাচ্ছা বেরোয় কিতা।
ওরে ওরে দুষ্টু মেয়ে
মারব তোকে আজ।
ডিমের গন্ধে নাকাল সবাই
কেমন তর কাজ।।
লাগল দুজন চুলোচুলি
কাটল ডিমের ভয়।
এমনটা আমার ছোট্ট মেয়ে
এমনি করেই রয়।
বড়টা দুষ্টু কম নয়কো
আরো খানিক বেশী।
তারও অনেক র্কীতি আছে
শুনলে পাবে হাসি।
অফিস করছি হঠাৎ এলো
স্কুল থেকে ফোন।
আপনার মেয়ের শরীর খারাপ
নিয়ে যান এখন।
ডাক্তার বুঝি দেখাতে হবে
এমনতর অসুখ।
হোঁস নেইযে একটুও তার
তুলছে নাযে মুখ।।
গাড়ি নিয়ে হড়বড়িয়ে
স্কুলে তে গেলাম।
ধরাধরি করে সবাই ট্যাক্সি
ডেকে নিলাম।।
রাখলাম আমার স্কুটিটাকে
একটা কোনে ভাই।
তারে নিয়ে ত্বরা করে
হাসপাতালে যাই।।
একটা দুটো ডাক্তার দেখে
আর চলে যায়।
আমি ভাবি কি এমন রোগ
কি যে করি হায়।।
ডাক্তার এলো বড় গোছের
হাত পা টিপে দেখে।
বলল ভাই মেয়েটি কে
এখানে ই যান রেখে।
বলল ডাক্তার কে হয় আপনার
এই যে মেয়েটি?
বললাম আমি আমার মেয়ে
করব এখন কি?
বলল ডাক্তার আরে ভাই
কাটতে হবে পেট।
মাস খানেক রাখতে হবে
পরে বলব ডেট।।
হায়রে কপাল কি হয়েছে
কি এমন  রোগ?
শেষ কালে কপালে মোর
এত দূরভোগ।
লাফিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে
আমার বড় মেয়ে।
হয়নি কিছু ওগো বাপি
চলো না এখন নিয়ে।।
হাঃ হাঃ করে হাসে ডাক্তার
কি হলো সোনা।
রোগটা যে সেরে গেল
পুরো ষোল আনা।
হ য়নি কিছু ওরে ভাই
বিচ্চু একটা মেয়ে।
হতে পারে স্কুলেতে ঘুম
দিয়েছে গিয়ে।।
রাতে র বেলা হয়নি ঘুম
ফোন দিয়েছেন বোধ হয়।
তারি ঠেলায় মেয়ে আপনার
মিথ্যে কথা কয়।
শুনলে সবাই গল্প আমার
সংসার করি আমি।
দুই মেয়েতে জীবন আমার
করল জলা ভূমি।।


===*===