আজ হাজার রাতের অপেক্ষার পর
তোমার দেখা পেলাম।
সেই যে যখন আমি স্কুলে -
সবে দেহের কুঞ্জবনে সোনালী ফুল ফুটেছে।
তুমি এলে -আমাদের গাঁয়ে।
আমি গরীব স্কুল মাষ্টারের মেয়ে।
অর্ধছিন্ন স্কুল ড্রেসে।
আমার রূপ তখন গোলাপ কুড়ির মতো।
তুমি এলে।
বাঁশ বাগানের ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে দেখতে।
আমি দেখতুম আড় চোখে।
হাতে থাকত বই -ছেঁড়া বই।
বুকের ওপর চাপা।
তুমি দেখতে।
একদিন-
আমার বাবার কাছে এলে বাংলা শিখবে বলে।
বাবা বাংলা পড়াতেন।
তুমি এলে -
আমার দিকে চাইলে।
আমিও-
আমাকে একটা ড্রেস ও কিছু বই কিনে দিলে।
কি রকম করে যেন আমার মনের গভীরে ঢুকে পড়লে তুমি।
তোমার সঙ্গ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা -
আমাকে পেয়ে বসল।
তুমি এলে -
মা আমার জন্মের সময় আমাকে ছেড়ে চলে গেছে।
ভালোবাসা কি খুব একটা বুঝি নি।
তুমি এত ভালোবাসলে।
তুমি এলে-
আমাকে ডাকলে, বাবা ছিল না ঘরে।
আমাকে ডাকলে-
সব বাঁধন খুলে গেল আমার।
আলগা হয়ে গেলাম আমি।
তুমিও-
আমার গরম শরীরটায়-
তুমি চলে গেলে সেদিন, আর আসনি।
আমার শরীরের ভিতর আর একটা শরীর ক্রমশ বাড়ছে।
তোমার রক্ত তার শরীর জুড়ে।
তুমি অদ্ভুত !
সেদিনও তোমার অপেক্ষায় থেকেছি। কিন্তু আসনি।
বাবা আত্মহত্যা করল আমি করিনি।
কারণ তোমার রক্তের সংরক্ষন করছি।
গ্রাম থেকে চলে এলাম
না তাড়িয়ে দিল।
রাতের মায়াজালে আজ এখানে।
এখানে কেউ লুকিয়ে আদর করে না?
আদর করার দাম দেয়।
ঘন্টায় ঘন্টায় দাম।
চারশ পাঁচশ কোনো ব্যাপার না।
আজ তুমি সামনে আমার সামনে।
চিনতে পারছ না বোধ হয়।
তুমি ভদ্রলোকের ছেলে এখানে কেন?
কেমন আছো কবিতা?
আমি আবেগে আদরে কেঁদে ফেললাম -মনে রেখেছ আমায়?
বললে চলো, আমি তোমায় নিতে এসেছি।
আমি ! আমি কি করে যাব?
আমি যে বারবনিতা।
বললে না -তুমি কবিতা।
তোমার মধ্যে হাজার পাপ ভরে দিলেও তুমি পবিত্র।
চলো তোমাকে নিয়ে যাই আমার ঘরে -
সকলে তোমায় দেখবে,পড়বে,বুঝবে।
===