প্রবুদ্ধ কবি গোপাল চন্দ্র সরকারের লেখা আজকের (22/10/2020) প্রকাশিত অপূর্ব অনন্য এক ব্যঙ্গাত্মক কাব্য তৃষ্ণাহীনের সুখ।



          তৃষ্ণাহীনের সুখ (ব্যঙ্গ)
        কবি গোপাল চন্দ্র সরকার


চৈত্রের চাতক কাতর বুকফাটা তৃষ্ণা
শুষ্ক ঠোঁট কষ্ট পায় বারি করে যাচনা
জ্ঞান পিপাসুর অন্তর রয় না বসে কাবু
রাতদিন কষ্টে ভোগে মীমাংসায় তবু
নবচেতনায় জ্ঞানীর জগৎ বাঁধন হারা
কখনো সে তীব্র তৃষ্ণা করে গৃহছাড়া।


তৃষ্ণাহীনের সুখজগৎ না কোন খেই
আচার বিচার চিন্তন শূন্য এমনিতেই
পায় না অন্তর জ্বালা বিচার ঝামেলায়
ভবে গা এলিয়ে চলা আলস্য ধারায়
চাতকের কষ্টরে ধরে না তার অন্তরে
আপাতত মধুক্ষরণ কাটায় সে সুন্দরে।


প্রথমেই প্রজ্ঞ কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই ও জানাই গভীর আন্তরিক ভালোবাসা।
ব্যঙ্গাত্মক কাব্যে দুটি স্তবক তুলনামূলক বা দুটি দিক। একদিকে তৃষ্ণার্ত আর অন্যদিকে তৃষ্ণাহীন/অসাধারণ উপাদান সম্ভার ।


একদিকে (প্রথম স্তবকে)
তৃষ্ণার্ত তার জ্ঞান পিপাসায় কখনোই যেমন কাবু হতে চায় না তেমনি তীব্রতর পিপাসায় ঘরছাড়া হতেও দ্বিধা করেন না, শুধু তাই নয় তৃষ্ণায় একটা সময় জীবনটাও উৎসর্গ করে দেন। নিত্য নতুন জ্ঞানের উন্মেষ ঘটে চলে / পায় নব চেতনায় নব দিগন্তের ঠিকানা। / ভাবনার গভীর হতে গভীরে মেলায় অমৃতের খোঁজ। অসাধারণ কবির উর্বরতা।


ঠিক অন্যদিকে (দ্বিতীয় স্তবকে)
তৃষ্ণাহীনের সে মধুময় সুখের জগৎ যেথা কোনও রহস্য নেই কোনও সমস্যা, নেই তার কোনও সমাধান সুত্র, নেই কোনও চিন্তা, নেই কোনও ঘাত প্রতিঘাত শুধুই অলসতায় ভরা চির শান্ত যেন চলছে তো বেশ বলে গা এলিয়ে চলা আর ধীরেই পঙ্গু বিচার শক্তিতে সুখের সুখী অনুভবে জীবন কাটানো তার পরম প্রাপ্তি। তৃষ্ণার্তের কষ্টের বোধগম্যতা পর্যন্ত হারিয়ে ফেলে চলে একদিন / বাহ্ কি চমৎকার আলস্য পঙ্গু বিবেক তৃষ্ণাহীনে। কবির এমন উর্বর কলমের ভাবনা সত্যি ব্যঙ্গাত্মক কাব্যে সার্থক ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।


অসাধারণ তুলনামূলক দুটি স্তবক যেন একই বৃন্তে একশ আশি ডিগ্রিতে জোড়া তৃষ্ণাহীনের সুখ ব্যঙ্গাত্মক কাব্য সার্থক।
আর একবার হার্দিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই প্রিয় শ্রদ্ধেয় কবিকে।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন কামনা নিরন্তর ।