প্রতি মুহূর্ত যেমন বাঁচার নেশায় জীব কুল করে চলেছে জীবন মরণ লড়াই, তেমনি জড়ের রয়েছে আকৃতি পরিবর্তনের বাধাজনিত বল (রূপের বৈশিষ্ট্য) । তা সত্ত্বেও প্রকৃতির অদম্য স্বয়ম্ভু ক্রিয়ায় তা প্রতিনিয়ত রূপান্তরে চলে বস্তু রূপের সংগঠিত ও বিসংগঠিত ক্রিয়া।


সাহিত্যিক বা কবিদের ভাবনার কোনও গন্ডি হয় না একথা যেমন ধ্রুব সত্য, তেমনি আমরা যারা সাহিত্য বা কাব্য রচনা করে চলেছি তাদের বিবেচনা করতে হবে রচনাকৃত কাব্য বা সাহিত্য কতোটা বস্তুগত পঞ্চ ইন্দ্রিয় অনুভূতির যোগ্য অথবা, সভ্যতার কতোটা অন্ধত্ব কে দূরীভূত করে ইন্দ্রিয় অনুভূতিতে আলোকিত করতে পারছি।


আমরা যা কিছু উপাদান ব্যবহারে সাহিত্য এগিয়ে নিয়ে চলি না কেন তা যে বস্তুগত সে কথা অনেকেই হয়তো জোর দিয়ে বলতে পারি, পাশাপাশি বলতেই পারি কাল্পনিক লেখনীতে আনন্দ, ব্যথা, বেদনা, ভয়, মায়া, মমতা, স্নেহ, ইত্যাদি প্রকাশে মানুষের মস্তিষ্কের সচলতা, মস্তিষ্কের বিকাশ সহায়তা, ও মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য প্রদান করি।


কিন্তু কল্পনার উপাদান যখন সভ্যতাকে গ্রাস করে অন্ধকারে নিক্ষেপ করে, যেখান থেকে আলোয় বেরিয়ে আসার পথ পাওয়া অসম্ভব হয়ে পরে তার দায় সাহিত্যিক কবিদের এড়িয়ে গেলে চলবে না।
কারণ ~
অন্ধ বিশ্বাস এবং তার অনুসারী এর জন্য শিক্ষার প্রয়োজন হয় না, লাগে শুধু বিশ্বাস আর বিশ্বাসের সমর্থনে কিছু নোংরা, অশ্লীল, নিকৃষ্টতম গালাগালির শব্দ সম্ভার ও তার নিষ্ঠুর দানবতায় হত্যালীলার কৌশল।


যেখানে এ বিশ্বলয় চলিছে পারস্পরিক সহযোগিতায়, শুধু এই কঠিন বাস্তব জ্ঞান বোধিস্বত্ব পেতে মস্তিষ্কের ভাবনার বিবর্তনের যে বিপুল দক্ষতা ও ক্ষমতার প্রয়োজন তার মূলে কঠোর অধ্যয়ন ও তার সঙ্গে প্রকৃতির সঙ্গীকরণ। এর জন্য মস্তিষ্কের যে পরিমাণ পরিশ্রম  হয় এবং ধারণ ক্ষমতা প্রয়োজন হয় তা, মানুষের মস্তিষ্কে থাকলেও চাপ মুক্তির আশায় মানুষ এড়িয়ে চলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
এটি সকল জীবের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য তাই স্বাভাবিক ছন্দেই মানুষের মধ্যেও তা পরিলক্ষিত হয়।


একদা অনুন্নত মানুষের গড়া সভ্যতায় মানুষ বদ্ধজীব, শিশু হতে আমৃত্যু ইন্দ্রিয়ের দ্বারা অনুন্নত মানুষের উদ্ভ্রান্ত রীতি নীতি মগজে সংরক্ষণ করে আজও, তার কিছু বাস্তব থাকবেই কারণ সেই অনুন্নত মানুষটিও এই প্রকৃতিরই অংশ ছিল। কিন্তু সমাজের অলিন্দে সেই কল্প ভ্রান্ত বয়ে চলেছে এমনভাবে যে, এখন বাস্তব প্রকৃতির বারোআনা কথায় তার বিরুদ্ধ চারণ ঘটে, যা অনুন্নত মানবের অন্ধ গোঁয়ার অনুসারী মেনে নিতে পারে না। ফলে ঐ কথিত অন্ধ বিশ্বাস অনুসারী দ্বারা নির্যাতিত হয় বাস্তব মানবতা পূর্ণ মানুষটি, এমন কি প্রাণ নাশ পর্যন্ত হতে দেখা যায়।


এমন একটি সমাজ নিতলের জটিল সমস্যা নিরসনে যাদের ভূমিকা সবাগ্রে থাকা প্রয়োজন তারা কারা?


আবারও বলছি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে দৃঢ় বিশ্বাস তারা সমাজের জ্ঞানবান বুদ্ধিজীবি যার মধ্যে কবি, সাহিত্যিক, সর্বাগ্রে স্থান পায়।
আর, সমাজের ধারক ও বাহক কাব্য, সাহিত্য, তা সর্বজন বিদিত।


তাই সকল বুদ্ধিদীপ্ত, প্রবুদ্ধ, গুণীজনের নিকট বিনম্র আহ্বান আসুন এমন জটিল সমস্যা নিরসনে সঙ্ঘবদ্ধ মানবতা পূর্ণ এক সভ্যতা সাহিত্য দর্শন গড়ে তুলি।
নিশ্চয় একদিন সভ্যতা, চরম মানবতার অহিংসে উন্নীত হবে, যা হবে সভ্যতার শ্রেষ্ঠ শ্লাঘনীয় কাজ।


সকল শ্রদ্ধেয় জ্ঞানবান কবিদের জানাই জনকল্যাণ শুভেচ্ছা ও অকৃত্রিম ভালোবাসা।



ধৃতি রাজ