দাড়ি গোঁফ যথেষ্ট প্রাচীন হয়ে গেলেও বাড়িতে এখনো আমার স্কুল ছাড়া নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়নি। কান দুটোর আত্মসম্মান উপেক্ষা করেই বাবা-মা আমার নাক কাটার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু স্কুল ছেড়ে আমিও কি কষ্ট পাইনি? বেশ বাবার হোটেলে চলত সব। স্কুল ডিঙিয়ে কলেজে যাওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে খোঁজ খবরও করেছি কয়েকবার। অবশেষে আঠারো বছর বয়সেই বোঝা বওয়া শুরু হল মানে বইতে বাধ্য করা হল মানে স্কুল বেড়ানোর শ্রাদ্ধ হল। কি আর করা যাবে কলিজা নাড়ানো ছাড়া--ঐ বাংলার স‍্যারটাইতো সব ইতিহাসের মূলে।


তখন আমি ইলেভেনে, আর্টস-এ পড়ি। একটু একটু পাকা হতে শুরু করেছি। কায়দা করে চুল ছাঁটা, হামতুম ব‍্যাগ...এই সব। মাধ্যমিকে কম নম্বর পাওয়ার দুঃখ-টুঃখ, বাবা-মা'র ভয়ঙ্কর গম্ভীর চালচলন মোটামুটি তখন গ‍্যালারির বাইরে। ফুরফুরে মেজাজ, বেশ চলছিল। আচমকা মাঝখান থেকে হাফ-ইয়ারলি পরীক্ষা ছুঁটে এল। বিষম বেকায়দায় পাঁক-কাদা থুড়ি পরীক্ষা কাটিয়ে বেরুলাম। শুধু বাংলা পরীক্ষার দিন রচনা লিখতে গিয়ে সময় কম পড়েছিল। চারটা রচনার মধ্যে একটা করতে বলা হয়েছিল। আমি তাজমহলটাই শুরু করেছিলাম। কিন্তু সময় বেশি ছিল না, যখন দু-তিন মিনিটের মতো বাকি আমি তখন প্রায় দিশেহারা হয়ে লিখেছিলাম, 'সময়ের অভাবে তাজমহল অসম্পূর্ণ থেকে গেল মমতাজ!'