অন্ধকার ভোর
আমি রাস্তায় , দূর পথ-যাত্রী।
মাঝ বয়সী এক মেয়ে, কাটিয়ে কালো রাত্রি
আমার সামনে উপস্থিত।
আমাকে দেখেই এক ঝটিকায় মুখ ঢেকে দেয় ,
কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে ঠিক। এরপর পাশ নিয়ে নেয় -
আমি সরতে পারিনি।
কি যেন এক পাপ, ছোবল মারছিলো অসহায়
সবার অলক্ষ্যে নিশ্চুপঅপরাধ,
আমি মেয়ে- টিকে জানি। বসতী আমারই পাড়ায় ,
একদিন এসেছিলো আমার কাছে। মুখে বিনীত সাধ,
কাজ চেয়েছিলো, পড়াশুনাতে সে মন্দ নয়,
যে কোনো একটা কাজ , ভালো।
বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো তাঁর বাবা -র রোজগার,
সেই কারখানা , এখন স্বার্থন্বেষী শ্রমিক দখলে,
পাঁচ জনের পরিবারে নামে অন্ধকার কালো।
ছুটতে দেখেছি মেয়ে -টিকে হন্য হয়ে। কাজ চাই, আর
ছোটো দুই ভাই বোনের স্কুল , ব্যাস কিছু টাকা এলে
দু বেলা দু-মুঠো ভাত।
সময় ছিলোনা আমার কাছে , অথবা ভাবিনি প্রয়োজন,
সময় ছিল না কারও কাছে ,
কেউ শোনেনি একটি কথা, ভাবেনি কিছুক্ষন
বিনা আবদারে , একটি রাস্তা দাঁড়িয়ে আছে ,
হাসি- মুখে পাপ।
সেই মুহূর্ত কঠিন এক বাস্তব , গায়ে এক শিহরণ,
খুব চেনা মনে হলো মেয়ে-টিকে , যেন কেউ আমার।
নিজেকে শেষ করে দিচ্ছিলো ক্ষুব্ধ এক আলোড়ন,
বার-বার বলছিলো লজ্জাটা কার ?  
কেন এতো দয়াশূন্য পৃথিবী ? কেন এতো অন্ধকার ?
কোথাও কি ছিলোনা জায়গা , একটু ভালো খাবার ?
কেন শুধু বুঝেছিলো তাঁকে-
নিশ্চুপ কালো রাত ।।