কেন যে আপনারা দুশ্চিন্তা করেন?
আমি তো ভালোই আছি, নিরাপদেই আছি।
তবুও আপনারা শুধুই ছটফট করছেন।
এ দুঃশ্চিন্তা মনোকষ্ট ছাড়া আর কিছুই দেয় না।
চিন্তা না করে আমার জন্য দোয়া করবেন।


এই যে দেখুন,
গত দু'দিন প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়েছে।
প্রায় দু'শ পঞ্চাশ জন পুলিশ ও চার জন মিলিটারী মারা গেছে।
আমরা জিততে পারিনি,
তবুও মনোবল ভাঙেনি।
যদিও লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় পুরো শহর ফাঁকা,
ভাই হারানোর দুঃখ বুকে জ্বালিয়েছে ক্রোধের চাকা।
কাঁদছে বোন , কাঁদছে ভাই, হারিয়ে গেছে সহোদর;
বেঁচে আছে যারা, ভালো আছে সবে, দিবেন খবর।


একবার ভাবুন তো, ঢাকার কথা!
যে হারে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে,
সেখানে আমাদের বেঁচে থাকাটাই এখন লজ্জার!
তবে মরে গেলে মৃত্যুটা হতো বোধ হয় গৌরবের।
আপনাদের দোয়ায় যখন বেঁচেই আছি -
তখন ঘরে শুয়ে-বসে, লুকিয়ে মরাটা কি শোভা পায়?


একবার ভেবেছিলাম বাড়ি আসবো।
কিন্তু যুদ্ধে তো এখনো জিততে পারিনি।
হেরে বাড়ি যাওয়া আর পালিয়ে বেড়ানো এক কথা।
এভাবে পালানোর অপমান বাড়াবে মনে শুধুই ব্যথা।


তাই তো দৃঢ় শপথ নিয়েছি,
বেঁচে থাকলে যেদিন জিততে পারবো,
লাল-সবুজ পতাকা স্বাধীনভাবে উড়াতে পারবো,
কথা দিলাম সেদিনই বাড়ি ফিরবো।
__________________________
২৯ ডিসেম্বর ২০২০; রাত ১২.০০ টা।


[ শহীদ কাজী নূরুন্নবী এর লেখা চিঠি অবলম্বনে]