গল্প করে সময় কাটায় তিন বুড়ো,
শান বাঁধানো পুরনো বটতলায় ;
পোড়োমাতলার রাস্তা হচ্ছে বড় ।
গাছ-গাছালি পড়ছে সব কাটা,
শহর এবার লন্ডন হচ্ছে আজ ।
আর কটা দিন যেমন চলছে চলুক -
নতুন বুড়োর জন্ম নেই যে হেথায় ।


সবার বড় হাবুল ঢোল -
কয়েদ বেলের কঠিন খোল ;  
উলুধ্বনি শঙ্খনাদে
জন্মে ছিল বড্ড গোল ।


মহামানব ঠিকানা নেই জানা,  
“ধন্য আমি” বলতে হবে তাও ;  
পুরাণ গাথায় লেখা কথা নানা -      
মানতে হাবুল পারে-নি তা আজো ।  
বট গাছ তো অনেক কিছু দিল -
সমাজ আজ বলছে ওকে কিলো ।


দু নম্বর খ্যাংড়াকাঠি বুড়ো,  
দর্শনে (শাস্ত্রে) সে সবার ছিল খুড়ো ।  
জীবন নিয়ে খেলা লুকোচুরি -
দেখেই গেল, বোঝেনি সুড়সুড়ি ।  


অন্ধকারে ছিল আত্মা,
আলো পেল হেথায় ;
গভীর নীরবতা ভেঙ্গে,
পরিচয়ে মাতায় ।


এই বট-টার কাল কি হবে ?
আত্মসুখে চিড় ধরিয়ে
কষ্ট আসুক নেমে ;
শেষ বেলাতে ছল-চাতুরি  
মিছেই গেল ঘেমে ।  


এলো গেলো ছ-টা ঋতু,  
ছত্রিশ-টা ফাঁদে -
ছিয়াত্তর বয়েস হল বুড়োর ;
জ’ন্মে ছিল মধুমাখা রূপোর চামচ মুখে,
লোভ-পিপাসা- বিলাসিতা অপরিসীম সুখে -
ডুব সাঁতারে উছল মাছে
নজর ছিল কঠোর ।  


অস্তাচলের দিন অদূরে
পেছন ফিরে কিসের সাফাই ?  
হরু, বীরু, শামল, কানাই
একে একে বলেছে ‘বাই’ -
সমাজ এখন কাল গুনছে,  
কবে হবে বটের জবাই ।


জীবন-মরণ বর্ষার জল -
নেই তো আবেগ না জানে ছল ।  
মিলনমেলায়, বিরহব্যাথায়
সুখদুঃখ জড়িয়ে যেথায় ।  


দুঃখ কেবল বট-সমাজের -  
ধন্য হয়ে “জনম ফের” ।