উষ্ণ এই পরিবেশে      অদক্ষ ভাবুক বেশে
   ভাব নিয়ে ভাবছি বসে, কি লেখা যায় ।
এই নিঃসঙ্গ জীবন,      নিকটে নেই স্বজন,
   সহসা বিষাদ আসে জীবন পাতায় ।
গগনে গরজে মেঘ,      হৃদয়ে জাগে আবেগ,
   অযাচিত আবেশে মন, ভাবিত হয় ।  
ছেড়েছি আদর-স্নেহ,     সব আছে, নেই কেহ,
   শিকলে আবদ্ধ হয়ে কিসের সঞ্চয় ।
মুক্ত বায়ু গান গাওয়া,   ত্যজিয়া সকল পাওয়া,
   যান্ত্রিক সমাবেশে মোর আগমন ।
প্রশ্ন উঠে মোর মনে,    অহরহ ক্ষণে ক্ষণে
   জীবনে নীত হ’ল নিদারুণ পণ ।
প্রবাস কঠিন দেশ,       জড়ানো কঠিন ক্লেশ,
   কঠোর মানুষের যত সব ভীড় ।
অকপট হৃদয় মোর,      আড়ম্বর নয় ঘোর,
   নশ্বর ধরণীতে খুঁজি সুখের নীড়।
যারে অতি ভালবাসি,     অধরে মধুর হাসি,
   সে যে আমার বঙ্গ ভূমি, শ্যামা জননী ।
সেখানে খেজুর রস,      স্বাদে ঘ্রাণে হয় সরস,
   রসের ঘ্রাণে নেচে উঠে দেহের ধমনী ।
পৌষের হিমেল বায়ু,      বাড়ায় প্রাণের আয়ু,
   সজীব রয় শ্যাম বনানী, তরু লতা যত ।
বিরহের ব্যথা ল’য়ে,      সতত চলেছি ব’য়ে,
   প্রবাসে জীবন যাপন যেন মহাব্রত ।
বঞ্চনার জীবন মাঝে,      রত থাকি শত কাজে,
   অসীম বাসনা রাশি জাগরিত প্রাণে ।
মনে গাঁথি আশামালা,     আশাগুলি দেয় জ্বালা,
   বেঁচে থাকতে চায় প্রাণ, মিছে মায়ার টানে ।
এই কথা সত্য বটে,      যা কিছু ঘটবে ঘটে,
       বিস্মৃত হবে না কভু রবে চির স্মৃতি ।
কেবল ভাবনা-বলে,      একটি কথা যাই ব’লে,
   সতিকারের সাধনা লভে চির প্রীতি ।
মন করেছি উৎসর্গ,      সেই সাথে যত অর্ঘ্য,
   কখনও বা হাসবে মুখ, সুধাময় হাসি ।
যত ব্যথা এই অন্তরে,    ব্যক্ত হ’ল অবসরে,
   লাঘব করি কিছু ব্যথা, অনন্ত প্রবাসী ।।