নামটি তোমার কালো ঝিনুক থাকো জলের তলে
স্বভাবতই আবাস তোমার ছোট নদীর জলে ।
প্রথম তোমার দেখা মিলে রূপা বেদের ঘাটে
রূপা বেদে তুলতো ঝিনুক রবি যখন পাটে ।
তোমার গর্ভে ধারণ করো মুক্তা নামক রত্ন,
তাইতো রূপা কুড়িয়ে তোমায় করতো এত যত্ন।
সেই রত্নটি দেখার তরে যেতাম নদীর তটে
উনিশ শ’ পঁয়ষট্টি সালেই মুক্তা দেখি বটে ।
রূপা বেদে ডেকে বলে, ওরে দীনু ত্বরা করি আয়,
দেখে যা আজ মুক্তা কেমন নদীর কিনারায় !
সেদিন থেকে তোমায় আমি বাসতে থাকি ভালো
ধন বিরাজে তোমার ভেতর, রঙটি শুধু কালো ।
কালো ব’লে ছুঁতো না কেউ, সবাই করতো ভয়
কালোর মাঝেই বিরাজ করে রত্ন মহোদয় !
তোমার পাছে মন্দচারী করতো অনেক জন
কালো-ধলো একই বস্তু, হায়রে অবোধ মন ।
আজও তোমায় ভালোবাসি আগের মতই জেনো,
কাছে পেতে সাধ হয় বড়ো, পাইনা কাছে কেন ?
বহু দূরে থাকো তুমি সেই বিরহে মরি,
ঘোর স্বপনে শুধু তোমার ছায়াটুকু ধরি ।
ঘুম ভাঙ্গলে অঝোর কান্নায় বালিশ ভিজে জলে
হৃদয় পু’ড়ে ছাই হয়ে যায় বিরহের অনলে ।
এই বিরহ ঘুচবে কখন বুঝতে নারি আর
আমার প্রতি বিধাতার এই কেমন অবিচার ?
এই বিরহ এমনই যে, রাধা-শ্যামের মত
যতই আমি স্মরি’ তোমায়, ব্যথায় মরি তত ।  
ইছামতির জোয়ার-ভাঁটায় ভাসছে ভালোবাসা
ইছামতি আমায় বলে মিটলো না তোর আশা ।
বেঁধেছিলি ঘরখানা তোর বড়োই আশা করে’
সুখ সোহাগ তোর ভেঙ্গে নিলো সর্বনাশা ঝরে ।
ঝিনুক আমার প্রাণ প্রেয়সী, ঝিনুক নয়ন মণি
ঝিনুক আমার ছায়া সাথী, ঝিনুক প্রেমের খনি ।
ঝিনুক আমার কোটের ল্যাপেল, ঝিনুক গলার টাই ;
অন্তিম কালে একবার যেন তারি দেখা পাই ।।