ষড়ঋতুর আবর্তনে এলো ফাল্গুন মাস ,
ফুটছে বনে কুসুম কলি, সজীব হ’ল ঘাস ।
আমের বনে বইছে আজি মিষ্টি মধুর ঘ্রাণ
নানা ফুলের সুগন্ধে আজ, ভরছে মনো প্রাণ ।
ওই যে দেখি ললনাগণ, ফুল তুলছে বাগে ,  
ফুল দিয়ে সাজাবে খোঁপা, নানা ফুলের রাগে ।
বনের গাছে ঘিঞ্জি শাখে, বাঁধছে পাখী বাসা ,
বংশ বৃদ্ধি করার তরে তাদের অনেক আশা ।
মধুকর গুঞ্জরে মধুর, গুন গুন তার রব ,
ফুলের যত মধু আছে চয়ন করবে সব !
কোকিল গায় কুহু রবে শ্রুতি মধুর স্বরে
বিরহিণীর আঁখি হ’তে ব্যথার অশ্রু ঝরে !!
ওই তো আছে আমের শাখে, কপোত কপোতী ব’সে ,
ঠোঁটে ঠোঁটে প্রেম চুম্বনে, ডুবছে মিলন রসে !!
ফাল্গুন হ’ল মিলনের ক্ষণ, পদ্যে গদ্যে পাই ;
বাউল কবির গীত গ্রন্থনার, নাই কো জুড়ি নাই ।
ঐ দেখা যায় নব বধূ চলছে সুদূর গাঁয় ,
লাল শাড়ীটার ঘোমটা উড়ে ফাল্গুনী বায় !
পিতা যে তার আগে হাঁটে, হাতে দুধের ঘটি ;
ধুতি পাঞ্জাবী গায়ে, পায়ে পাতলা চটি ।
মেয়ের হাতে ছোট বাক্স, আলতা পরা পায় ,
নয়ন জলে ভেসে ভেসে, যায় সে সোনার গাঁয় !
নাইওর শেষে সোনার মেয়ে ফিরছে শ্বশুর বাড়ী ,
সাথে হাঁটছে ছোট ভাইটি, বইছে ক্ষীরের হাঁড়ি !!
ফাল্গুন জাগায় হিয়ার মাঝে নব শিহরণ,
অজানা এক ভাবাবেশে উদাস করে মন !
দস্যি ছেলে দল বেঁধে খুব, ঘুরছে বনে বনে ,
মধু হরণ করার তরে ফন্দি আঁটে মনে ।
নিবিড় শ্যামল সমারোহ, সাজায় সারা বঙ্গ ,  
হৃদয়ের অনুরাগ জেগে, কাঁপায় সারা অঙ্গ !!
পাখীর গানে ফুলের ঘ্রাণে, কবি পাগলপারা
ভাবের রসে ডুবছে কবি, ভাবেই দিশেহারা !!
শ্যামল স্নিগ্ধ বনতল আজ, ফুলে ফুলে ঢাকা
হৃদয় পটে স্মৃতির ছবি হ’য়ে রইল আঁকা ।।