আমাদের বঙ্গভূমি, উর্বর কৃষিভূমি
নদী মাতৃক বিধৌত পলি মাটি সঙ্গে
আরও উর্বর করেছে তাকে এ বঙ্গে,
তবুও কেন যেন তার দারিদ্র সর্বাঙ্গে!
গরিব গৃহস্থবাড়ির একান্ত গৃহকোণে
থাকে ঘট, পাতা থাকে লক্ষ্মীর আসন
সাজসজ্জা, মূর্তি নয়, ঘটেই ঘটে তার
ভজনা-অর্চনা, অধিক পূজা সমাপন।
গরিবেরই থাকে ধনী হওয়ার স্বপ্ন আশা
দারিদ্র তাপিত জীবন থেকে খোঁজে পথ
খোঁজে একটু আনন্দ-সুখ, মুক্তির দিশা।
'বৃহস্পতিবার' -এর নাম হয় 'লক্ষ্মীবার'
ঘরে ঘরে কন্যাসন্তানের নাম হয় 'লক্ষ্মী'
ধূলিমলিন, যেমনই হোক তার বেশভূষা!
লক্ষ্মীকে পেতে তাই কোজাগরী ব্রত মানা,
লক্ষ্মী পুজো বা বিত্তবাসিনীর আরাধনা।
কোজাগর, কোজাগর — কে জাগে?
যার নেই, সে পাওয়ার আশায় জাগে
যার আছে, সে হারাবার ভয়ে জাগে!
আমাদের লক্ষ্মীদেবী চঞ্চলা, ক্রোধী নন
তাই লক্ষ্মীর ঝাঁপি, লক্ষ্মীর পিঁড়ি পাতে
ধনী-দরিদ্র সবে, গৃহস্থের প্রতি গৃহকোণ।
উপাচার তো অল্প, সামান্য ফুল বাতাসা
ধোয়া পিঁড়িতে চাল পিটুলির আল্পনা,
সিঁদুর থেকে দর্পণ, আর মধুপর্কের বাটি
দ্রব্যাদির সাথে পান-মশলার বাটাখানা।
সমুদ্র মন্থনে অমৃত পূর্ণ কুম্ভ নিয়ে চরাচরে
জ্যোৎস্না প্লাবিত এ-পৃথিবীর হেমন্তে আসেন
লক্ষ্মী, শুধু মাত্র একটি রাতের অতিথি হয়ে
আবাহন করি, —"এসো মা লক্ষ্মী, বসো ঘরে
আমার এ ঘরে থাকো আলো করে"...
"আঁকিলাম আল্পনা, দূরে ফেলি আবর্জনা
শুভ-শুদ্ধ মন নিয়ে, করি তব আরাধনা!"


টালিগঞ্জ, কোলকাতা।
রচনাকাল : ০৯|১০|২০২২