অনেক শহীদের রক্ত, তাজা প্রাণের বিনিময়ে
ধীর পায়ে স্বাধীনতা এসেছিলো...
ধুলোমাখা পথে আমাদের পাতার কুটিরে।
বহু কাঙ্খিত সাধের সে স্বাধীনতা!
সেদিন গঙ্গার বুকে ব্যাপক জোয়ার এসেছিলো
আমরা ছুটে গিয়েছিলাম দু'হাতে মুক্তো কুড়োতে
.... পাইনি একটাও মুক্তোর ঝিনুক!
শতাব্দীর পারে শুধু ঘোলা জল এসে ভরে গেছে!
তারপর, উড়ে গেছে সময়...
উড়ে গেছে মা বোনেদের বুকের কাপড়
জমা হয় সারি সারি অপমান আর সহস্র লজ্জা!
মুখ ঢাকার দরকার নেই --
কারণ, এখানে লজ্জা বিকোয় অতি সস্তা দরে!


কতো অভিশপ্ত গোপন রাত কেটে যায়...
নাভিছেঁড়া বিষাক্ত রাত!
কতো ফুলের গর্ভকেশর বোলতা মৌমাছির
বিষ হুলের দংশন আর কামড় খায়
আর কাতরায়..... মরণ যন্ত্রণায়!
বিষভরা দাঁত একে একে কলঙ্ক এঁকে দেয়
ছড়িয়ে পড়ে কলঙ্ক -- ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের মতো।


দিনে দিনে কেমন বড়ো হয়ে যায়...
নাম গোত্রহীন আমাদের বস্তির দশভূজারা!
তারপর, ছিন্নভিন্ন হয়ে টুপটাপ ঝরে যায়
শরতের কতো আগমনী!
ওদের সোঁদা গন্ধের ছোটো ছোটো কাপড়ে
ড্যাবড্যাবে চোখে চেয়ে থাকে -
দারিদ্র্য, অভাব, দুঃখ, অন্তহীন যন্ত্রণা...
আর ঋতুহীন যৌনতা!
প্রতিটি স্বাধীনতা দাবী করে ওরাও স্বাধীন!


প্রতি বছর স্বাধীনতা এলে ওরা অপেক্ষায় থাকে
কখন তাদের রাজা ছড়িয়ে দেবে একমুঠো ভাত
অপেক্ষায় থাকে কখন বৃষ্টি নামবে
এক ফোঁটা, দু'ফোঁটা করে...
টিপটিপ... রুমঝুম... ঝমঝম!
আর তারপর, তারও পর...
ঐ মিথ্যে প্রতিশ্রুতির দিনটা এলে
ওরাই লাস্যময়ী হয়ে টোল পড়া গালে
হেসে উঠে বলবে, ....' ব ন্দে মা ত র ম '!
"সারে জঁহা সে অচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা"!


.... হায়! স্বাধীনতা!!


18th August, 2018
রবীন্দ্র আবাসন, টালিগঞ্জ, কোলকাতা।