জানুয়ারি শেষ ফেব্রুয়ারি শুরু
শীত তখন যায় যায়
বিদায়ের ঘন্টা বাজায়।
কৃষ্ণচূড়া আর রুদ্র পলাশ
তার আগমন বার্তা পাঠায়
সরস্বতী পুজো এসে যায়।


চারদিকে শুধু হলুদের সমারোহ
কচিকাঁচাদের ব্যস্ততা ছোটাছুটি
হাতে ফুল আর গাঁদা ফুলের মালা
স্মৃতির আগল ভেঙে দুদ্দাড় করে
বেরিয়ে পড়ে আমার ছেলেবেলা।


একমাস আগে থেকেই চলে
রবীন্দ্রনাথের নাটকের মহড়া
সারাটা বছর কাটাবো কিভাবে
এমন অনাবিল আনন্দ ছাড়া?
তখন তো আর বুঝতে শিখিনি কিনা
আনন্দ আসলে বড়ো সীমিত পাওনা!


পূজার আগে রাত্রি জাগা
সকালে অনিদ্রার চোখ জ্বলুনি
কাঁচা হলুদের গন্ধে মাখামাখি
কিশোরীদের শাড়ির ঝলকানি!


মনের মধ্যে আনন্দের চোরাস্রোত
বাইরে তখন মৃদু মন্দ বাতাস
সেই বাতাসে গা ভাসানোর
এক বাঁধনহারা মুক্তির উচ্ছ্বাস।


বাটা হলুদের গন্ধ ঝাপটা মারে
আমার সজাগ তীক্ষ্ণ ঘ্রাণেন্দ্রিয়তে
স্মৃতিকণারা টুপটাপ ঝরে পড়ে
আজ জীবনের এই শেষ বেলাতে।


বিসর্জনের ঢাকের বাজনা শেষে
বাতাসে থেকে যেতো ধুনোর গন্ধ!


আজ আর বাতাস নয় শুদ্ধ
বাতাসে আজ বারুদের গন্ধ!
যুদ্ধ সন্ত্রাসের অনুরণন
চরম অশান্তির বাতাবরণ!


সরস্বতী দেবী সকলের কাছে
চায় শুধু সাদা সাদা ফুল
শান্তির মালা গাঁথবে বলে,
আমি খুঁজে বেড়াই সেই ফুল
আমার অন্তরের অন্তস্থলে।


আমি যোগান দিতে থাকি
প্রতিনিয়ত সেই মালার ফুল,
নিবেদন করি অস্ফুট কিছু শব্দ
হৃদি অন্তস্থল থেকে উৎসারিত -


দুঃখের শব্দ,... যন্ত্রণার শব্দ,
ঘুমের শব্দ,... মরণের শব্দ, ...
চিরনিদ্রার...
চিরশান্তির...
অনুচ্চারিত শব্দ!!