খোকা ,
ভালো আছিস তো ?
কত দিন হলো তোর মুখ দেখিনি ?
যে তুই আমাকে না দেখে থাকতে পারতিস না
এখন কেমন করে আছিস ,
আমায় ছাড়া ?


অনেকদিন হলো তোর মুখে
মা ডাক শুনি না !
যে তুই বাড়ি ফিরে আমাকে না দেখে
'মা-মা' ডাকে সারা পাড়ায় মাথায় তুলতিস ,
এখন কি একবার-ও 'মা' ডাকতে
মনে পড়ে না ?


বাবা ,
উঠোনের সামনে আমার হাতের তুলসীগাছ
যাতে সন্ধ্যেবেলায় পিদিম জ্বালতাম
সেটি কি এখনো আছে ?
নাকি আমার মতন সেটিকেও
রেখে এসেছিস কোনো এক
গাছেদের বৃদ্ধাশ্রমে ?


ফটকের সামনে
তোর বাবার ছবিটা কি আছে ?
নাকি তাতে ধুলো-বালি
কাঁচে ভাঙ্গন ধরেছে ?
নাকি ছুড়ে ফেলেছিস
কোনো এক আস্তাকুঁড়ে ?


প্রথম যেদিন ও বাড়িতে গেছিলাম
তোর দাদু বলেছিলো , মরার আগে চৌকাঠ ছাড়বে না
শেষ সময়ের আগে একবার
বাড়ি নিয়ে যাবি , যাতে তোর দাদুর
কথাটা রাখতে পারি !


জানিস খোকা !
অনেকদিন হলো তোর চিঠি পাইনি !
ডাক পিওনটা বোধহয় বৃদ্ধাশ্রমের গলি চেনেনা ,
তাই তুই চিঠি লিখলেও সেটি
আমার কাছে এসে পৌঁছায় না !


খোকা ,
তোকে অনেকদিন দেখিনা -
বড্ড মন কেমন করে !
একদিন আসিস , এই চার দেয়ালের মধ্যে
তোর মা কেমন আছে
দেখে যাস !


                       ইতি
             এক অভাগিনী মা
                বৃদ্ধাশ্রম থেকে