( পাঠকের কাছে আমার নিবেদন ঃ এই কবিতাটি আমার লেখা নয়। এটি আমার এক নিকট বন্ধুর লেখা, যে মাঝে মাঝে কবিতার আসরে এসে কবিতা পরে। অনেক প্রচেষ্টার পর তার একটি কবিতা আমার হাতে, আজ সেই কবিতাটি প্রকাশ করলাম। বন্ধুটির উদ্দেশ্য ঃ আশা করি এর পর তোমার কবিতা স্বনামে এই আসরে প্রকাশ হতে দেখবো )


কেউ বলে না...
~*~*~*~*~*~


দিনের শেষে
    শ্রান্ত বেশে
ক্লান্ত নীড়ে
    চলত ফিরে।


গিয়ে সেথা
    করত দেখা
নিকষ কালো
    চুলের সাথে।


চুলের খোপায়
    ছিল বাধা
মন যে তাহার
    মনের মাঝে।


মনের ভুলে
    আজ-ও চলে
আবার যে সেই
    পথটি ধরে।


পথের শেষে
    পড়ে  মনে
পথটি তাহার
    গেছে বেঁকে।


এখন-ও সেই
    পথটি আছে
আগের মতোই
    পথটি চেয়ে।


এখন শুধু
    হারিয়ে গেছে
পথের শেষের
    শ্রান্ত মেয়ে।


ক্লান্ত যত
    দিনের শেষে
নতুন জীবন
    দিত ভরে।


যখন তাহার
    কেউ ছিল না
তখন ছিল
    আপন করে।


এখন তাহার
    সব হয়েছে
এখন সে নেই
    পথের শেষে।


সেই তো ছিল
    দিবা শেষের
শিশির ভেজা
    সঙ্গী হয়ে।


তাহার কথা
    কেউ বলে না
কারণ সে যে
    নষ্ট মেয়ে...


~*~*~*~*~*~*~*~


শুধু যে আছে...
~*~*~*~*~*~


বাচ্চা ছেলে
  ন্যাংটো ছেলে,
    পথের ধূলায়
      শুধু-ই খেলে;
মায়ের ভয়ে
  লুকিয়ে পড়ে
    বাঁশ বনেতে
      চুপটি করে।


খেলার চলে
  যখন তাকে
    বন্ধুরা সব
      খুঁজে ফেরে,
তখন সে যে
  ঘাপটি মেরে
    লুকিয়ে থাকে
      ঝোপের ধরে।


নদীর ধারে
  বালির চরে
    গরম কালে
      স্নানের পরে,
যখন মাকে
  পড়ে মনে
    ছুট্টে  গিয়ে
      জড়িয়ে ধরে।


খাওয়ার পরে
  দিদার সাথে
    গল্প দেশে
      ঘুরে ফিরে,
ক্লান্ত হয়ে
  ঘুমিয়ে পড়ে
    দিদার কোলে-ই
      মাথা রেখে।


অনেক বছর
  গেছে কেটে
    সেই শিশুটি
      হারিয়ে গেছে;
কিন্তু কেন
  কে-ই বা জানে
    এখনো তার
      পড়ে  মনে।


দিনের শেষে
  যখন সে যে
    শ্রান্ত হয়ে
      ফেরে ঘরে,
তখন তাহার
  পড়ে  মনে
    সেই যে মা-টি
    নেই যে বসে ।


ঈশান কোনে
  অনেক দুরে
    কোথাও  সেই
      নদীর তীরে,
এখনও সেই
  ভিতটি আছে
    কিন্তু এখন
      ভগ্ন হয়ে।


শহরে-তে
  জ্বালা বড়
    পেটের খিদে,
      পথের ধুলো;
সারাটি দিন
  যায় মা কেটে,
    শুধু-ই কেবল
      পড়ে  মনে।


সোনালী সেই
  দিনগুলো সব
    সময় স্রোতে
      গেছে ভেসে;
আজ যে তাহার
  নেই কেউ আর
    শুধু যে আছে
      নষ্ট মেয়ে...  


~*~*~*~*~*~*~*~
কারণ  সে তো...
~*~*~*~*~*~*~


এখন বিকেল,
    ফাগুন মেলা,
শহর মেলা,
    নাগরদোলা।


সেই শিশুটি
    এখন পিতা
নতুন শিশুর
    জীবন দাতা।


নাগরদোলায়
    নতুন শিশু,
মিষ্টি হাসি,
    উষ্ণ বায়ু।


পিতাটি কি
    ভুলে গেছে
নতুন শিশুর
    জন্ম দিয়ে?


নাকি তার-ও
    পড়ে মনে,
এখনো সে
    ভুলতে নারে?


নতুন শিশুর
    মায়ের পাশে
এখনো সে
    চেপে কাঁদে?


কান্না মানে
    শুধু-ই কি জল?
নাকি সেটা
    মনের ভিতর?


জীবন স্রোতে
    ডোবে ভাসে,
মানুষ শুধু-ই
    সাঁতার কাটে।


নতুন শিশুর
    মায়ের কাছে,
কত কিছু-ই
    বলতে পারে।


সেই নদীতে,
    স্নানের পরে,
গরম বালু,
    বাঁশের ঝাড়ে।


গল্প বুড়ির
    হাতের আদর
মায়ের হাতের
    অনেক আদর।


তার কথাটি
    বলতে নারে;
কারণ সে তো
    নষ্ট মেয়ে...