যখন করোনা ছিল না, আমফানের ঝড় আসে নি
কোথাও কোন লকডাউন ছিল না,
তখনও এভাবে গরীব খেতে পেত না।
বাঁকুড়ায় পুরুলিয়ায় একবেলা খেয়ে দিন কাটায় ওরা,
ভাঙা খড়ের চালে ছিটে বেড়ায় ফাঁকে
ছেঁড়া ত্রিপল উড়ত পত পত শব্দ করে।
পাথর ভাঙতে ভাঙতে রাস্তার পিচ গলাতে গলাতে
বালি তুলতে তুলতে মাটি চষতে চষতে
ওদের বুক পাঁজর একাকার হয়ে যেত।  
তখনও কলকাতার রাস্তায়
ভিখারী ছেলেমেয়েরা কাগজ কুড়াত,
অফিস যাওয়ার পথে অনেকেই দেখেছে
ওরা  টায়ার পুড়িয়ে মুরগির ঠ্যাং সেদ্ধ করে খেত
তারই পাশে ঠায় রোদে পড়ে পড়ে ঘুমোত
কচি কাঁচা একটা দুটো বাচ্চা
আর কুকুরটা কি যেন শুঁকেই যেত।
গা চুলকাতে চুলকাতে ছেঁড়া জামা পরা মেয়েটিকে
আমরা অনেকেই দেখেছি,
দেখেছি ব্যস্ত রাস্তার মোড়ের মাথায়
মাটির ভাঁড়ে চা দিতে দিতে
গুনগুন করে গান করছে চাওয়ালা।
তখনও হাসপাতালে একটা বেডের জন্য একটু চিকিৎসার জন্য
কত রোগীর বাড়ির লোক পায়ের চামড়া ছিঁড়ে ফেলত,
তখনও পুলিশ লাঠি চালাত
কাওকে ঠিকানায় পৌঁছে দিতে
কারও বা ঠিকানা কেড়ে নিতে,
রাজনীতির যাঁতাকলে যে রক্তপাত
যে একে অপরের প্রতি বিতৃষ্ণার আগুনে
পুড়ে যেত সাধারণ
তা আগেও ছিল এখনও আছে।
অনুদান ত্রাণ রেশন পাইয়ে দেওয়া পেয়ে যাওয়া
এবং তার জন্য মাঝে মধ্যে ওঠা দু একটা ঢেউ
আগে যা ছিল এখনও তাই আছে।
কিছু পরিবর্তন হয় নি
কোন পরিবর্তন হয় না।