তোমরা যে যাই বলো
আমরা আসলে একা হতে চাই
আমরা শুধু একা হয়েই বাঁচতে চাই।


আমরা কতজন নিজের বাড়িতে
প্রাণ খুলে বলতে পেরেছি
আমি এই হতে চাই আমি ওই হতে চাই।
আমরা কতজন বড় হওয়ার জন্য
আমার এই চাই আমার ওই চাই বলতে পেরেছি?


আমরা বন্ধুরা যখন খুব গল্প করি
তখন আমরা কজন আমরা আমাদের সব কথা
একে অপরকে বলতে পেরেছি?
ভোগের থালা একে অপরের দিকে থেকে
শুধুই সরিয়ে নিয়েছি,
বাড়িয়ে দিয়েছি অসম্ভব যাপনের কিছু কিছু নিদর্শন।


কোন বাবা মা কি চায়
আমার ছেলে আমার মেয়ে
শুধুই শখের জীবন যাপন করুক,
তবু তারা চুপচাপ পার্থিব শখ পূরণ করেই যায়
জানে জীবনের এ পথ পথ নয়
তবু তার ছেলেকে মেয়েকে সে ভালোবাসে।


ভালোবাসে তবু তৈরি হওয়া জেনারেশন গ্যাপ
মনের আনাচে কানাচে বয়সের ভার
বিদ্ধ করে দগ্ধ করে
বলতে চেয়েও আটকে থাকা জিজ্ঞাসায়
বাবা মা ছেলে মেয়ে নাতি নাতনির সাংসারিক পৃথিবীতে
একা যাপন গুমরে কেঁদে ওঠে
কে কাকে বুঝতে চায় না কিংবা বুঝে যায়
বেলা পড়ে এল
একলা হওয়ার ডাক এসেছে দ্বারে দ্বারে।


পাশের বাড়ির ভালো মন্দ জীবন যাপন
আমাদের ভেতরে খুব একটা সাহায্যের প্রকল্প তৈরি করে না,
বরং অস্বস্তির দীর্ঘশ্বাস বার বার খেলা করে
আমরা হাত লাগাই মনের আগুনের আক্রোশে
বিকর্ষণের দোদুল্যমান খেলায়।


কেউ প্রাণ খুলে হাত বাড়ালে
কতরকমভাবে তার ব্যাখ্যা করি
বার বার আমি ইণ্ডিপেন্ডেট বলে কতবার
পরিবার পরিজন বন্ধুবান্ধব সবাইকে বিন্দাস ছেড়ে
বেরিয়ে আসি কোন এক এঁদো গলিতে,
কি পেয়েছি আর কি পাই নি অথবা কি পাব
সেটা বড় প্রশ্ন নয়
প্রশ্ন হচ্ছে আমি হনু হইয়া মনুর রাজ্যে
একা একেবারে একা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছি
এবং একা হয়েছি এ পৃথিবীর গণতন্ত্রে।


এ পৃথিবীতে প্রায় সব সময় কোথাও না কোথাও
এ বড় কঠিন সময়
হাতে হাত রেখে বাঁচার আহ্বান ওঠে
কিছু বাঁচে কিছু বাঁচায় আর সব শুধু বেঁচে থাকে।
একার আহ্বানে কত একা কেড়ে নেয়
গুছিয়ে নেয় নিজের আয়ত্তে শুধু নিজেকে বুঝে নেয়
তারপর নিজেকেও একা করে
শুধু বাস করে তেপান্তরের মাঠের ধারে।
সেখানে মানুষ তো দূরের কথা
মেঘ জল আলো বাতাস মাটি
মাটির বুকে শেকড়, শেকড়ের ডালপালা
সবকিছুকে হেলায় পদানত করার চেষ্টা করে,
কিছুতেই বিশ্বাস করে না
নিজে নিজের বুকের যন্ত্রণাকে।


শুধু একা হয়ে বেঁচে থাকে
একা।