আমি দাস হয়ে জন্মাইনি কারো
কিন্তু মৃত্যুর আগ অব্ধি আমাকে বোধহয়
ক্রীতদাস হয়েই থাকতে হবে।
যদিও দাসব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়েছে বহু আগে
ইতোমধ্যে আমেরিকায় নির্বাচিত হয়েছেন
একজন কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি,
আফ্রিকায় নেলসন ম্যান্ডেলারা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন
উল্টো চাবুক ছোঁড়া হয়েছে শ্বেতাঙ্গ শাসকের প্রতি—
তবু দাসব্যবস্থা আজও টিকে আছে ঠিকই।
আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন “কিভাবে?”
বলতেই পারেন “আধুনিক দাসব্যবস্থা নিয়ে
অনেক হয়েছে লেখা— এ আর নতুন কি!?”
আমি অতোকিছু বুঝিনা মহাশয়
অতো প্রশ্নের উত্তর দিতেও শিখিনি—
আমার শুধু নিজেকে মনে হচ্ছে
সুধীন্দ্রনাথের সেই উটপাখি,
আমি বুঝতে পারছি
অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ থাকেনা,
আমি বুঝতে পারছি
যে ডিমে আমি তা’ দিচ্ছি তা ইতোমধ্যে ভেঙে
চৌচির হয়ে গেছে,
এই দুর্বিপাকে আমি বারবার ভ্রান্তই হচ্ছি।
কেননা আমি জানতে পেরেছি আমি কারো বন্দী
কোনো অজ্ঞাতনামা বিধাতার আমি
সামান্যতম দাস বৈ আর কিছুই নই।
তাই রবারের ক্ষেতে বেগার খাটবোনা বলে
আমি বারবার পালানোর চেষ্টা করছি,
কিন্তু পারছিনা।
কারণ আমার পায়ে মোটা শিকল
চারিদিকে জার্মান হাউন্ড আর
উপর থেকে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে বিশাল বিশাল পাথর।
আমি বুঝতে পারছিনা
দাস হয়ে জীবনধারণ সহজ নাকি
মৃত্যুই অধিকতর কাম্য?
আমি বুঝতে পারছিনা
মৃত্যুর পরেও আমাকে কারো
দাস হয়ে থাকতে হবে কিনা—
আমি বুঝতে পারছিনা
কোন মহাসাগরে ভাসছি আমি,
আমি বোঝাতে পারছিনা
আমার বুকের মধ্যে কতোটা কষ্ট!


আমার জানা নেই আমি কেন কবিতা লিখছি
আমার বলবার নেই কথা কোনো,
আমার ভাষা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে
ইতোমধ্যে আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছে আমার জিহ্বার অগ্রভাগ—
আমি বুঝতে পারছিনা
আমার কলমের মূল্য বেশি
নাকি কালির?


১৫ জুন ২০২২।