।।পুরনো গাড়িবারান্দা।।


। পিয়ালী চ্যাটার্জী।


 বনেদি বাড়ির পুরনো গাড়িবারান্দা আমি
দাঁড়িয়ে আছি মোটা থামে ভর দিয়ে অনেককাল,
 ইতিহাসের সাক্ষী আমার ইটের পাঁজর দামী,
বয়সের ভারে তাদেরও এখন শীর্ণজীর্ণ হাল।
বিলাসিতার বাবুয়ানার দেমাক গায়ে মাখা,
পুরনো গাড়িটা তখনও আমার ছায়ায় রাখা,
কালো চকচকে পালিশ করানো,নাম অস্টিন।
ঠিক মনে পরেনা ওটা যেন কোন সাল?
পার্সি শাড়িতে সেজে একলা মালকিন
সিঁড়ি দিয়ে নামে তার পার্টির রাত,
বিয়ে নাকি বার্ষিকী নাকি জন্মদিন!
বিদেশী আতরে আমি গন্ধে মাতাল।
রোজই মালিক যায় অফিসের পথে,
আগেপিছে ছোটাছুটি পুরনো কর্মচারী
ড্রাইভার দরজাটা খোলে কোনোমতে,
গোঁফখানা মালিকের বেশ রাশভারী।
চকচকে হলেও গাড়ী বয়স তারও বেশী,
বেগ পায় সকালেতে রোজ স্টার্ট হতে,
ইঞ্জিন ক্লাচ ব্রেক চলে রেশারেশি,
আমার দিন ছিলো এই বাঁধা গতে।
সেসব দিন এখন সবই ইতিহাস
উত্তরসূরিদের এখন দেখা মেলা ভার,
মালিক মালকিন সব স্বর্গবাস
বাড়ির ভগ্নদশা কঙ্কালসাড়।
ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মামলা অনেক,
ঝোপঝাড় জঙ্গলে প্রাণ হাঁসফাস,
গাড়িরও ভগ্নদশা দরজা বোনেট।
আমার ছাদের তলায় কুকুরের বাস,
আর কোনো অবিরাম বর্ষার রাতে
গৃহহীন মানুষের সাথে সহবাস।
তবুও বাবুয়ানার দেমাক গায়ে মাখা,
বয়সের ভারে আরো শীর্ণজীর্ণ হাল,
পুরনো গাড়ীটা আছে আমার ছায়ায় রাখা,
জানিনা...
প্রোমোটারের হাতে যেতে বাকি কতকাল!
 
১৯/০৬/২০১৭