অনেক দিন তো হোলো...
তুমি ঘুম পাড়িয়ে রেখেছো-
সারা বিশ্বকে।


সারা বিশ্বকে তুমি করেছো নিস্তব্ধ ।
মাঝে-মাঝে গর্জে ওঠা এম্বুলেন্সের সাইরেন-
জানান দেয়-তুমি আজও আছো স্বমহিমায় ।


তুমি আকাশকে করেছ স্বচ্ছ নীল,
বাতাসকে করেছ দূষণ- হীন।
তোমার পরশে গাছে গাছে -
আজ পাখিদের কলকাকলি।
গঙ্গা পদ্মায় ইলিশ ডলফিনেরা, করছে জল-কেলি।
বাঁচার আনন্দে-
ওরা আজ সবাই-করছে খেলা,
তুমি আছ বলেই।


কিন্তু তুমি আমাকে-
আমার শহরটাকে-
সারা বিশ্বকে -
আজ ঘর বন্দি করে রেখেছো।
মানুষে-মানুষে দূরত্ব সৃষ্টি করেছো।
আমাদের পায়ে, আজ বেড়ি পরিয়ে দিয়েছো।


কবে মুক্তি দেবে আমাদের ?
এই বন্দি-দশা থেকে।
খুলে দেবে পায়ের বেড়ি?
মুছে দেবে সব লক্ষনরেখা!
কবে ফিরিয়ে দেবে ?
আমার চেনা শহরটাকে।
আবার কবে শুনতে পাব?
চলন্ত ট্রেনের কু-ঝিক্-ঝিক্-
ট্রেনের কামরায় চা-চাই-বাদাম-চাই- চুড়ি-চাই-


কবে আবার স্কুল কলেজ খুলবে!
কবে আবার বাচ্চারা পার্কে, মাঠে খেলবে!
কবে আবার বাজার দোকান সেজে উঠবে!
কবে আবার এই শহরটা গতিময় হয়ে উঠবে!
কবে আবার এই মানুষে-মানুষে দূরত্ব ঘুঁচে যাবে!
কবে আবার আমরা এই মুখ-বন্ধ ছাড়াই-
বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবো সবাই!


অনেক দিন তো হোলো!
তুমি আমাকে-
আমার শহরটাকে-
সারা বিশ্বকে-
ঘুম পাড়িয়ে রেখেছো!
তোমার জন্য আজ কত শিশু-
তাদের বাবা-মা’কে হারিয়েছে!
কত মা-বাবা তাদের সন্তান’কে হারিয়েছে!
কত মানুষ হারিয়েছে তাদের আপনজনকে!
কত পরিবার হারিয়ে গেছে-আদমশুমারি থেকে!


এবার তুমি থামো!
এবার তুমি জাগিয়ে দাও-
আমার ভালবাসার শহরটাকে।
ফিরিয়ে দাও আমার কল্লোলিনী তিলোত্তমাকে।
জীবনকে থামিয়ে দিওনা।
জীবনকে চলতে দাও-
জীবনকে বাঁচতে দাও-
তোমার সৃষ্টি সুখের আনন্দে।