দু’দিন ধরে আকাশটা যেন বড় একলা-
ঘন-কালো মেঘাচ্ছন্ন - বড় দুঃখী মনমরা।
মাঝে মাঝে টুপটাপ বৃষ্টি,
হাওয়া অফিসের রয়েছে অতন্দ্র দৃষ্টি।
বঙ্গোপসাগরে হয়েছে এক প্রচণ্ড ঝড় সৃষ্টি।


রেডিও, টিভি আর সংবাদপত্রে জানাচ্ছে প্রতিদিন-
সেই ঘূর্ণিঝড়ের নিউজ বুলেটিন।
ঘূর্ণিঝড় পরিনত হল বাড়িয়ে প্রবল শক্তি-
সুপার সাইক্লোন উম্পুন বিধ্বংসী।


প্রশাসন ঘন ঘন ঘোষোনা করছে মাইকে-
বিপুল জলোচ্ছ্বাস হবে দীঘার সমুদ্রে।
মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ হয়েছে,
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী-
উপকূলের বাসিন্দাদের সব নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে।


দ্বিতীয় দিনের দুপুর থেকেই-
বইতে শুরু করল দমকা হাওয়া-
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি।


সন্ধ্যা যখন প্রায় হয় হয়-
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে-
দুর্বার বেগে সাঁই- সাঁই আওয়াজে-
বাংলার বুকে আছড়ে পড়ল উম্পুন-
রণদুন্দুভি বাঁজিয়ে।
সাথে মুশলধার বৃষ্টি নিয়ে।


বড় বড় পাঁকা বাড়ির দরজা জানালা-
সব নিয়ে গেল উড়িয়ে।
যত ছিল কুঁড়ে ঘর, মাটির বাড়ি-
সব এক করে দিল মাটির সাথে গুঁড়িয়ে।


বড় বড় সব গাছের গুঁড়ি-
রাস্তার দু’ধারে শিকড় শুদ্ধ উপড়ে পড়ল।
কোনো গাছ আবার শিকড় উপড়ে-
আকাশ পথে দুরন্ত বেগে উড়ে চলল।


বিদ্যুতের খুঁটি গুলো সব তাঁর ছিড়ে-
লন্ডভন্ড হয়ে রাস্তার উপর পড়ে রইল।
চারিদিক যেন শ্মশানপুরী হোলো!


মানুষ ঘর চাপা পড়ল!
পাঁচিল চাপা পড়ল!
কত সহস্র গরু,বাছুর,হাঁস,মুরগী সব মরল!
শিশুরা পিতৃ হীন হোলো! মাতৃহীন হোলো!
উম্পুন আজ- মানুষের শেষ আশ্রয়টুকুও কেড়ে নিল।