দুপুরবেলা কাজের শেষে
ডাকতো যখন ঘরে এসে
আসন নিয়ে যেতাম কাছে
বসতে বলতাম গিয়ে পাশে
আসনে বসে ফেলত দীর্ঘ শ্বাস,
ঝর ঝর করে ঘাম ঝড়তো
মাথার ঘাম মাটিতে পড়তো
বাতাস দিতাম পাখা দিয়ে
পানি ধরতাম সামনে নিয়ে
পানি পিইয়ে ফুটতো মুখের হাস।


    তেল মাখিয়ে দিতাম গায়ে
   ডেকে বলতো জননী মায়ে
' নাওয়া খাওয়া হয়েছে মা?'
'সব হয়েছে তুই স্নানে যা
  বেলা গেছে তুই বুঝছিস না?'
  স্নান সেরে আসতো যখন
  ঠাকুর প্রণাম করতো তখন
  আসন পেতে ডাকতাম তাঁকে
  আহার করতো ডেকে মাকে
' অসময় হয়েছে তুই খেয়ে নে না?'


বিশ্রামের জন্য বিছানা পাততাম
শুয়ে পড়ার কথা বলতাম
বিশ্রাম সেরে উঠতো যখন
পানি নিয়ে ধরতাম তখন
বলতো আমায় - মাঠে চললাম আমি,
বিয়ে হয়ে অনেক দিন এসেছি
দুই সন্তানের মা হয়েছি
সংসারে পেয়েছি মধুর ব্যবহার
সে কথা বলার নয় আর
ভাবি মনে দেবতুল্য আমার স্বামী।


সকালে ছড়া ঝাট সন্ধ্যাকালে বাতি
সংসারের লাগি খাটতাম দিনেরাতি
দূর বিদেশে যখন যেতো স্বামী
ঈশ্বর পদে স্মরণ নিতাম আমি
সে সব কথা মনে করলে অন্তরে লাগে ব্যথা,
শ্বাশুড়ি আমার মায়ের মতো
ভালমন্দ সকল কিছু্ই জানতো
শিশু সন্তানের কিছু হলে
চিকিৎসার কথা সদা বলে
শুনতো বুঝতো জানতো সংসারের কথা।


প্রাণে আমি পাই ব্যথা
স্বামী বলে না এমন কথা
ঘরে রয়েছে শ্বাশুড়ি মা
কী মধুর ব্যবহার বলার না !
এমন স্বামী - শ্বাশুড়ি পাই যেন বারবার,
জন্মিলে মরিতে হবে
অমর কেহ নাহি রবে
জানি না কি আছে কপালে
আগে যদি বহি চলে
স্মরণে রেখো আমায় স্মৃতিতে তোমার।


                                     ১৩/১২/২০১৭