কথা ছিলো নাতিনাব্য মনের ঘাটে খুশির ঘটী উগরে-
ওদেরও তো জল-সিক্ত হবার,
কেন তবে সুখের কণাদের নিষেক হয় না এখানে?
হয় না কোন নিখাদ আনন্দের সূতিকাগার,
গুমট বাতাসে ভাসমান উদ্বাস্তু সুখ-রেণুদের জমাট হয় না-
দৃষ্টির কোণ ঘেঁষে ফোঁটা হয় না কোন আনন্দাশ্রু!


যুগে যুগেই এখানে হানা দেয় চেঙিস-হালাকুরা;
হোক না নববর্ষ, ভালোবাসা দিবস, মে দিবস একই দৃশ্যপট,
বাদ যায় না পূজো-পার্বণ, বড়দিন বা ঈদের দিন পর্যন্ত;
অবিরাম চলে যমদূতের উল্লাস নৃত্য!
কেন এতো জয় জয়কার মৃত্যুর; কেন এই রক্ত-স্নান!
এই শোণিত পিপাসা মিটবে কখন?


হায়েনার দাঁতাল চোয়ালে নিষ্পেষিত মানবতা কেঁদেছিলো্ -
হিরোশিমা-নাগাসাকিতে,কম্বোডিয়া-ভিয়েতনামে;
ইতিহাস ভুলেনি ৭১এর ২৫ মার্চের সেই ভয়াল কাল রাত!
বেয়নেটের আঘাতে খসে যাওয়া করোটি;
ফিনকিতে বেরিয়ে আসা মগজের কান্নায় কেঁদেছিলো চরাচর,
তবুও এতটুকু টলেনি ঈশ্বরের ধাতব প্রাণ!


অতঃপর ইরাক, আফগানিস্থান সিরিয়া আর জেরুজালেম;
পূর্ব-পশ্চিম সর্বত্র জীবনের পেন্ডুলাম প্রতি মুহূর্তে দুলে;
নির্বিচারে চলেছে নারকীয় খড়গ !
নির্বিশেষে বিপন্ন আবাল বৃদ্ধ বনিতা, রক্তাক্ত সদ্য জাত শিশু;
এমন কী রেহাই মিলেনা  আপন মাতৃগর্ভেও!


স্প্লিন্টারে খসা ঘ্রাণেন্দ্রিয়ে সুখাদ্যের সুবাস লাগেনা মোটেও,
বারংবার অনুভূতি জাগায় কোন রকমে বেঁচে থাকবার;
অষ্টপ্রহর প্রলুব্ধ করে পুড়ে যাওয়া জীবনের অন্তিম ঘ্রান!
অঙ্গ যাবে যাক; এখন সংগ্রাম শধুই টিকে থাকবার।


কুম্ভকর্ণ বিধাতা!
এ কেমন আকাল তোমার?
আর কতো পূজো চাই; কতো কোরবানি-বলি!


লেলিহান শিখায় বিদগ্ধ সুখের নীড়,
জ্যান্ত পুড়ে যাওয়া দেহের ছাঁই-ভষ্ম;
থেঁতলানো করোটি-মস্তক, বিখণ্ডিত দেহ-ধর;
সতীত্ব খোয়ানো যুবতীর করুণ চাহনি;
বলৎকারে সংজ্ঞাহীন কিশোরীর রক্তাক্ত গোপনাঙ্গ-
অভুক্ত বিকলাঙ্গ শিশুর করুণ আর্তনাদ..
এসবই আজকাল বড্ড প্রিয় হয়ে উঠেছে তোমার!
আর কতো কুমারীর জরায়ুতে যুদ্ধ শিশু চাই?


রচনা কালঃ ১৩ জুলাই ২০১৩