কী জানি, কী এক দহন পোড়ায় হৃদয়,
তোমারে কতদিন দেখিনাই হায়!
যখন প্রত্যহ কেটেছে তোমার প্রত্যাশায়,-
এখনও চেয়ে থাকি চাতকের মত পিপাষায়।
প্রেমিকেরা কত ছল করে বাচে!
অনন্ত তৃষ্ণা বুকে তবু তারে নাহি যাচে।
তোমাতে মরেছিলেম সে বছর খানেক আগে-
কী লজ্জা, কী দ্বিধা  কী প্রগাঢ় অনুরাগে!
দহন হত শুধু ওই চোখের পানে চেয়ে-
কী ভয়, কী সংকোচ সর্বদা গেছি বয়ে।
পাথরের মত পাষাণ হয়ে শুধু কারণে অকারণে,
ছুটে গেছি,  কত মান অভিমানে;
বোঝাতে চেয়েছিলাম অব্যাক্ত অনুরাগ;-
তুমি জানতেনা? তোমার অধিকারের ভাগ,-
সে ত শুধুই আমার।
তাই বার বার -
কোন এক অজ্ঞাত অধিকারে,
বাধতে চেয়েছি তোমারে।
তোমার পাশে অন্য কেহ হাটুক,
তোমার সময় অন্য কারো সাথে কাটুক;
এতটা উদার হতে পারিনি আমি কোনদিন,-
হয়ত হবেনা হৃদয় তেমন।


আমার কোন দ্বিধা নেই আজ বলতে,
জীবনের বাকি পথ চেয়েছি তোমার সাথে চলতে।
কী অদ্ভুত স্বপ্ন বেধেছি আমি শিমুলের লালে,
নববর্ষায় কদমের ফুলে।
বাধতে চেয়েছি তোমারে এক তারে,-
এক সুরে।
নাহ কোন মোহে নয়, নয় আবেগের উচ্ছাসে;-
'যে মানুষ হৃদয়ে তোমার'   তারে ভালোবেসে।
তোমারে জানাতে পারিনি ব্যাথা,
কী ভাবে বলতাম বলো সে কথা?
আমার জায়গা থেকে কীভাবে এগুতাম?
কিভাবে নিতে তুমি? এই সব ভাবতাম।
তোমার প্রতি প্রগাঢ় মুগ্ধতা আমার,-
জানা ছিল সবার!


সেও বুঝি জানত তোমার কথা,
সেও বুঝি জানত আমার গোপন মানুষ কে তা;-
তোমার তরে এমন করে আমার ব্যাকুল আকুলতা।
দেইনি ধরা তবু যেন চোখে পানে চেয়ে-
'হৃদয় চরায় চলছে ক্ষরা' বুঝলো বুঝি নারীর হৃদয় দিয়ে।
তুমি তখন বকুল বীথি তলে,
দক্ষিন হাওয়ায় হৃদয়ে আমার যাচ্ছো দুলে দুলে;-
অতল প্রেমের দ্বন্দ্ব বিদূর ক্ষুদ্ধ সমীরণে,
আমি তখন হারিয়ে গেছি তোমার গহীন বনে।


কোথা থেকে কি যে হয়ে গেলো,
হটাৎ ঝড়ে সকল এলোমেলো!
ক্ষ্যাপার মতো যে ধন খুজে ফিরি-
বুঝলাম আমি হেথায় হোথায় বৃথা ঘুরে মরি।
তোমার ঠোঁটের, তোমার চোখের মায়া,
আমার মনে ফেলে গেছে অনেক বড় ছায়া।


কত কথা বলত সকলে,
ভেবেছিলাম সে সব কথা ভুলে-
তোমায় নেবো আমার করে তুলে।
নিজের হাতে পরম যতনে,
গড়বো তোমায় আপন মনে,-
পৌছে দেবো সবার থেকে উচ্চ আসনে।
আমার মাঝে তুমি যে গেছো অনেক আগেই হারায়,
সেও আমি বুঝেছিলাম তোমার চোখের তারায়।
তাইত তোমায় সকল দ্বিধা ফেলে,-
হৃদয় কথা বানের জলের মতো দিয়েছিলাম বলে।


আশার ছলনে ভুলাইনিত কোনদিন,
শুধাইতে চাইনিত কোন ঋণ।
মিথ্যা প্রপঞ্চক স্তুতি সে নয় তোমার,
যখন তোমাতে পেয়েছি সেই অমৃত সরোবর।
আমারে জাগায়েছো তুমি নবতর রুপে,
কী আশ্চর্য অনুভব পেয়েছি তোমারে সপে;
এই ক্লান্ত প্রান,-
যে জীবনের খোজে এতটা বছর করেছি সন্ধান!


বলতাম তোমায় হেসে -
আগুন নিয়ে বসে,
পুড়বোনা তাই কখনো হয়?
এক রশিতেই বাধা যখন মিথ্যে সেতো নয়।
হৃদয় তোমার পুড়ত যখন কিসের দ্বিধা নিয়ে,
আমার বুকে আগুন জ্বেলে থাকতে লুকিয়ে?
তোমার সাথে কেমন করে এমন তর ভাবে,
জীবন আমার জড়িয়ে গেলো অবাক হই ভেবে!
কত মানুষ এলো গেলো তবু কারো জন্যে কভূ,
এমন করে জীবন প্রদীপ হয়নি নিভূ নিভূ।


জানি আমি কোথায় তুমি বেধে;-
ব্যাকুল হয়ে গোপন ব্যাথায় মরছো কেদে কেদে!
তাইত তোমায় সকল দ্বিধা ভুলে,
চিরদিনের মতো করে নিয়েছিলাম তুলে।
চিরদিন সংগোপনে,
এই প্রেম যায় কেমনে?
ধরা যদি না পড়ি দোহে এই গভীর ব্যাথা বয়ে,
ক্লান্ত হয়ে হতাশ হয়ে তোমার আমার হৃদয় যেত ক্ষয়ে।
দুই পাহাড়ের দুটি ধারা হটাৎ এসে মিশে,-
একটি নদীর স্রোত হয়ে চলুক অনাদিকাল ভেসে।
বৃথা আর যেয়ো নাকো দূরে,-
এসো মরি দোহে,   একসাথে জন্ম -জন্মান্তরে।