"কুমারী গর্ভকোষ"কবিতাটি অামার পড়ার মাঝে অন্যতম একটি সেরা কবিতা।এ এমন এক কবিতা যার গভীরে বারংবার হারিয়ে যাওয়া যায়।কবিতাটিতে রূপকতার অাশ্রয় এতো বেশি যে, কবিতাটি পাঠ করার পর এক একটি ভাবনার নতুন নতুন রূপ প্রকাশিত হতে থাকে মগজে ও মননে।এ কবিতার রহস্য এতো সুনিবিড় যে,মনে হয় বারবার এর কাছে ফিরে অাসি।


অাবহমান পথে কবির নিগূঢ় মনে জীবন বাস্তবতার  প্রতিফলন স্বরূপ যে দৃশ্যের ভূমিকা লালিত হয় তাই যেন রূপকতার অাড়ালে এখানে ফুটে উঠেছে।।
এ কবিতায় দেখা মেলে জীবন দর্শন,সমাজের অঙ্কীয় স্থানে পরিভ্রমণ,অালোর পথে প্রতিটি প্রজন্মের দিকে অাত্মবিশ্বাসী স্বপ্ন গড়ে তুলার গোপন ইশারা,নিজেকে ক্ষয় করে হলেও সাংসারিক বেড়াজাল ছুঁয়ে সকল শুদ্ধ অার নির্মলের প্রতি নিবিষ্ট মনোযোগ।"কুমারী গর্ভকোষ"এমন এক উপমা যার কোন ক্ষয় নেই।এ গর্ভকোষে লালিত হয় সকল ত্যাগ,অভিমান,ক্ষোভ,অাত্মদর্শন,সমাজের অায়না ইত্যাদি,অালো অার অন্ধকারের মাঝে এক পরম যুদ্ধ,যেখানে অালোই কেবল বিজয়ী হয় প্রত্যেক যুগে যুগে অর্থাৎ এ যেন কুমারীর মতোন সতেজ,নির্মল,যার গর্ভকোষে শুদ্ধ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকবে প্রজন্ম হতে প্রজন্মান্তর।
কবি বলছেন---
"সূর্যগ্রহণের অন্ধকারে নামাবো নিষিদ্ধ পল্লীর বিপ্লব
অামি ওদের শিখিয়েছি এ অন্ধকার চিরস্থায়ী নয়"
"নিষিদ্ধ পল্লীর বিপ্লব"----এ উপমার অর্থবহতা যেকোন পাঠককে ভাবাতে বাধ্য করবেই।সব উপেক্ষিত গোষ্ঠীকে(অবহেলিত,দলিত,সংখ্যালঘু) নিয়ে জাগরণী বার্তা।


এ কবিতার প্রতিটি শব্দচয়ন অার বুনন এতো সুন্দর যে যার কোন জবাব নেই।লেখনীর হাত একদম পরিপক্ব।কিছু কিছু উপমা এ কবিতাকে কালোত্তীর্ণ করলেও অবাক হবো না।যেমন---


"লাল লেলিহান জিভে সাপটে মুছে দিবো দেবতার অভিশাপ"---কী দুর্দান্ত!
"অজাতশত্রু অহংকারের মাটিতে কুমারী গর্ভকোষ"---অসাধারণ।
সত্যি বলতে এমন কবিতা খুবই দুর্লভ।এ কবিতাকে নিয়ে অালোচনা করার যোগ্যতা অামার হয়ে উঠেনি তবুও নিছক ভালো লাগা হতেই এ প্রচেষ্টা।


যা হোক,বাংলা সাহিত্যের পাতায় "কুমারী গর্ভকোষ"কবিতাটি স্ব-মহিমায় বেঁচে থাকুক  এই কামনা করি....