অর্চি।এক একটা মুহূর্ত সুতোর টানে ফিরে এসে কলঙ্কাতীত স্মৃতিচিহ্নের পাশে এনে দেয় অন্ধকার স্রোত
গরম ভাতের কথা ভুলে গিয়ে উনুনে জ্বলতে থাকে শরবিদ্ধ আহত শব্দের ইতিহাস;জীবনের সর্বগ্রাসী সুর.........


প্রেম চলে যাচ্ছে ,কিন্তু বুকে মাংসের ক্ষোভ, প্রণয়ের পর্যটনও অতিথিশূন্য,পড়ে আছে শূন্য কলসিতে রাখা পাথর,
দেখেছ কি?গিরিখাতে চলছে উপরে উঠার কল্প-নির্মান,শক্তির চাপে ভোরের-রক্ত বেয়ে কাঁপুনি তোলে অতীতের-ফুল,
রেণুগুলো ছড়িয়ে -ছিটিয়ে আছে আপেক্ষিক বেদনায়,জন্মান্ধ-প্রেমিক নিয়তির ভগ্নস্তুপে শুধু খুঁজে বেড়ায় ঘ্রাণ....


অর্চি,মূর্ছা যেওনা,কারণ জিরাফের গলায় ঝুলে উচ্চতম বৃক্ষটির পাতা ছুঁয়ে প্রেমিক জানতে চায় শিকড়ের ইতিহাস
পাখির কাছে বিলিয়ে দেয় বীজের দানা,আহা!অরণ্য উৎসবে শ্বাপদের উচ্ছ্বাস, হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে ধুলোর সৈনিক!


পরাজিত চোখে ভেসে ওঠে প্রেমিকার অপসৃয়মান মুখশ্রীর রূপ,শেষে,সময়ের দূরত্বই কেড়ে নেয়
জন্ম-জন্মান্তরে খুঁজে পাওয়া প্রেমের সাজানো নথিপত্র……  


তবু  সময়ের প্রতাপ দেখে
বহ্নিশিখায় হাত রেখে খুঁজি মৃত্যুর ঠিকানা-----
                                        জন্ম-ই আমার শেষ নাম।


জিহ্বায় উচ্চারিত হয় স্পর্শহীন ভাষার গৌর-বর্ণমালা    
কিন্তু স্লোগানে স্লোগানে বেঁচে থাকার দাবি শুনে
আমার পলাতক পাখির পিছনে তাড়া করে রহস্যময়ীর বিষমাখা তীর!
অবজ্ঞায়,দু’একটা পালক পড়ে থাকে হয়তো;
তবু প্রাণ তো ফিরে আসে না ....

কী গূঢ় বেদনায় বলতেও পারিনি আঘাত পেয়েছি শপথভাঙার দিনে!
তবু কেন আমার ঐ অতিরঞ্জন-আকাশ জুড়ে শুধুই রহস্য-বিদ্যুৎের অমায়িক খেলা ?  
আহা শিরশির কম্পন!
  
                 কৃপণ মেঘের কাছে বৃষ্টির প্রতীজ্ঞা শুনে
প্রণয়ের নর্তকী-ঝড় তুলে দিয়ে পৃথিবীর সুকোমল বিছানায়
প্রসারিত করে দিয়েছি বোধাতীত হৃদয় ...


ওহে মায়া, তোমরা দৌড়াচ্ছো কেন? ক্ষান্ত হও ...
দুরন্ত কিশোরের চোখেই দেখতে পাবে আমার কানামাছি খেলার সরলতা।


কোথায় যাও? কোথায় যাও?
হে বাংলার বেনামী কবি, তুমি বিকশিত হও,
পাহাড়ের পাদদেশে জমা করো মৃতের হাড়,মাথার খুলিতে বাজাও মন্ত্রধ্বনি  
শব-বাহকের দল জানাবে কুর্ণিশ, ঐ ঐ হাড়-মাংসে প্রবল ঘর্ষণ!
জেগে উঠবে জন্মের নাট্যমঞ্চ
                                নাচবে খেমটাওয়ালি ধিনতাতাধিন্ ......


না, না, ওমন দৃশ্যপট সইবে না, ক্ষমা করো প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকার
!
প্রভাতে প্রভাতে ঈশ্বরের অভিশাপ, টুকরো-টুকরো আকাশ-ডাঙা ;
অলোকসুন্দর কৃষ্ণচূড়া ডালের স্নিগ্ধ ছায়ার আশ্রয়ে
               চিরনিদ্রায় শায়িত আমার অতিরঞ্জন-আকাশ-বার্তা।  


না, এ অসম্ভব!
ঐ পৃথিবীকন্যাই
শিশিরস্নাত প্রভাতে
এই আহত যুবকের বুকে রেখে দিয়েছে রক্ত-গোলাপ
ঠোঁটে বিলিয়েছে এলাচের গন্ধ।


ডিমের কুসুমও যেন সূর্যের ছবি!
প্রেমের ধূম্রকুণ্ডুলী পাকিয়েছে আ-দিগন্ত, রক্তে উঠেছে তুফান,
চোখে মৃদু ঝাপসা, স্বেদ-সিক্ত ললাট, পদপ্রান্তে শ্বাপদের নিঃশ্বাস।


না, এ অসম্ভব!
পৃথিবীকন্যার ঐশ্চর্যভারেই আমি যেন হয়ে পড়ি স্থির-অচঞ্চল;
সে কি আমার সিন্ধুরূপসী?
তাঁর জলমগ্ন আলিঙ্গন ভুলিয়ে দিবে কি বহ্নিশিখার আন্দোলন?


অাজ জীবনের ইতিবৃত্ত ভেঙে সংজ্ঞাহীন ক্লান্তিতে
ছদ্মবেশে বসে আছি তোমাদের বেনামী উপত্যকায় ...


পৃথিবীর মানুষেরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় আসলে কে আমি? কী আমার পরিচয়?
কে এই ইথার?


না, এ অসম্ভব!
আমাকে তোমরা খুঁজে পাবে সহস্র উপায়ে
অামি অাছি পারাপারহীন সমুদ্রের উপর উড়ে চলা
                এক ঝাঁক অন্ধ পতঙ্গের ডানায়...


অাসুক তোমাদের উগ্রমতী বালিকা,টাঙিয়ে দিক রৌদ্র-অাকাশ।
                 ঋণগ্রস্ত হোক অামার পৃথিবী,
সে হয়ে উঠুক মহাকালের জাতক
ওষ্ঠ ছুঁয়ে জেনে নিক মাংশাসী জীবনের ইতিহাস।

অামাকে তোমরা খুঁজে পাবে সহস্র উপায়ে
অসমাপ্ত যাত্রায় অাগে পার হয়ে যাও মরণফাঁদ!


মন্ত্রবলে জ্বালিয়ে নাও বহ্নিশিখা,সর্পমুখে।
কেটে যাক সব ব্যধিঘোর......


অামাকে তোমরা খুঁজে পাবে সহস্র উপায়ে
ভুলে যাও সব কাঁদামাখা স্মৃতি;


নত হও ফুলের কাছে,সুন্দরের কাছে.....
ছিনিয়ে অানো ঐ ঐ অাকাশের ধ্রুবতারা!


নিরুত্তর ভাবনায়...
সময়ের প্রতাপ পায়ের তলায় পিষ্ট করে
দগ্ধ কাঠের মাঝেই খোদাই করে নাও
একটি অাশ্চর্য নাম........ভালোবাসা......