চাঁদের বুকে নুড়ি ভেঙে
গড়িয়ে পড়ে জল
তারপর আস্তে আস্তে মিশে যায়
অনন্ত অম্বর।
আমার ছোট গাঁয়ে আছে
মধুমতী নদী
মুখে মধু নামে মতি
রূপে পাগল আমি অতি।
সুমিষ্ট জল বুকে ত্বরিত চলে মতি
দুগ্ধ সম পান করে চারিপাশের
রেইনট্রি হিজল বনের সারি।
নুয়ে পড়ে বাঁশঝাড় মোচা কদলীর
ছুঁয়ে দেয় জোয়ার জল আনন্দে মাখামাখি
নৌকা সারি সারি ছাপ যেন জলশাড়ির।
ইঞ্জিন ট্রলার চলে গেলে ক্ষেপে উঠে মতি
একুল ওকুল দুকুল ভাঙে তান্ডব ভারী।
ধ্যানভাঙে মাছরাঙার-----
নানা রঙের রঙতুলিতে পাখায় ঝিলমিল
শ্যামা ময়না টিয়া ঘুঘু উড়ে দল বাঁধি
নির্জনে চলে যায় যেথা বনের সারি।
জলে করে জলকেলি
আদরের সোনামণি
হৈচৈ মাতামাতি
আমুদে মধুমতী সাথে করে নাচা নাচি।
মায়ের সাজে সাজে তখন
হাসে দুষ্ট মিষ্টি মতি।
বড়শি দিয়ে মাছ ধরে জেলে পাড়ার
অলি বুকের কষ্ট তবুও চাপে
হৃদে বাড়ে ধুকপুকানি।
যৌবনবতী বারোমাস
শীতে চর জাগে খানিক
কাশফুল ঘাসফুল ফুটে
থাকে নদীরকুল মতির হয় নাকফুল
গন্ধ বিলায় মনোহরা
নিম ফুলের সাজে ডালা।
মনের সুখে মধুমতী চলেছে বহুযুগ
অনন্ত যৌবনা সে
চলতে তার সুখ।
মনভোলানো মনমাতানো
মনের সুখে গায় গেয়ে চলে
বাউল মাঝি নিশির জোছনায়।